Monday, December 1, 2025

এনজিও সম্রাট ইউনুসের কাছে কৃষকের মৃত্যু কেবল পরিসংখ্যান মাত্র

আগস্টের ২৭ তারিখে কৃষি মন্ত্রণালয় যখন ঘোষণা দিলো পঞ্চাশ হাজার টন আলু কিনবে, হিমাগারে ন্যূনতম দাম হবে বাইশ টাকা, তখন এই দেশের আলুচাষিরা হয়তো শেষবারের মতো একটু আশ্বস্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলো, একটা আলুও কেনা হলো না। এটা কি শুধুই অদক্ষতা, নাকি সুপরিকল্পিত উদাসীনতা? যে সরকার বিদেশী টাকা আর সামরিক সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তাদের কাছে কৃষকের আর্তনাদ কেন পৌঁছাবে?

প্রশ্নটা হচ্ছে, ঘোষণা দেওয়ার দুই মাস পরেও একটা আলু কেনা না হলে সেই ঘোষণার মূল্য কী? এটা তো স্রেফ মিথ্যাচার। আর এই মিথ্যাচারের খেসারত দিচ্ছে দেশের লাখো কৃষক পরিবার। যেখানে উৎপাদন খরচ ছাব্বিশ থেকে আঠাশ টাকা, সেখানে আলু বিকোচ্ছে আট থেকে এগারো টাকায়। মুন্সীগঞ্জে ক্ষতির পরিমাণ দুই হাজার পঁয়ত্রিশ কোটি টাকা, রংপুরে দুই হাজার কোটি, জয়পুরহাটে একশো সাতাত্তর কোটি। এগুলো শুধু সংখ্যা নয়, এর পেছনে আছে অসংখ্য পরিবারের বেঁচে থাকার সংগ্রাম।

কিন্তু যে সরকার নিজেই অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তারা কৃষকের বৈধ পাওনা নিয়ে মাথা ঘামাবে কেন? ইউনুস আর তার তথাকথিত উপদেষ্টারা যেভাবে ক্ষমতায় এসেছেন, সেই প্রক্রিয়াতেই তো বোঝা যায় তাদের অগ্রাধিকার কোথায়। জুলাইয়ে দাঙ্গা বাঁধিয়ে, নির্বাচিত সরকারকে ক্যু করে ফেলে দিয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তাদের কাছে দেশের কৃষি খাত, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কি আদৌ কোনো বিবেচ্য বিষয়?

দেখুন বাস্তবতা। গত বছর নভেম্বরে যখন আলু সত্তর থেকে আশি টাকা কেজি ছিল, তখন কৃষক ভেবেছিল এবার হয়তো লাভ হবে। সেই আশায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় সাতান্ন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ করলো। চল্লিশ লাখ টন বেশি উৎপাদন হলো। কিন্তু এই উদ্বৃত্ত সামলানোর কোনো পরিকল্পনা কি ছিল? রপ্তানির বাজার খোঁজা হয়েছে? বাফার স্টক তৈরি করা হয়েছে? কিছুই না। বরং ঘোষণা দিয়ে কৃষককে আশ্বস্ত করার নাটক করে, তারপর দুই মাস ধরে হাত গুটিয়ে বসে থাকা হয়েছে।

আর এদিকে কী হচ্ছে? বাইশ টাকার ঘোষণার আগে পাইকারিতে ষোলো থেকে সতেরো টাকায় আলু বিক্রি হতো। ঘোষণার পর দাম নামলো নয় থেকে এগারো টাকায়। এটা কীভাবে সম্ভব? সরকার যখন ন্যূনতম দাম ঘোষণা করে কিন্তু সেই দামে কেনে না, তখন বাজারে একটা ধারণা তৈরি হয় যে চাহিদা নেই, কেউ কিনবে না। ফলে দালাল আর মধ্যস্বত্বভোগীরা আরও কম দামে আলু কিনে নেয়। সরকারের এই ব্যর্থতা, নাকি এটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য? কৃষকের দুর্দশায় কারা লাভবান হচ্ছে, সেই প্রশ্নটা তো থেকেই যায়।

রাজশাহীর একজন চাষি বলছেন, তার হিমাগারে এক হাজার আড়াইশো বস্তা আলু পড়ে আছে, এক কেজিও বিক্রি হয়নি। মুন্সীগঞ্জের সাহারা বেগম, যার স্বামী অসুস্থ, তিন সন্তানের দায়িত্ব তার একার ঘাড়ে, বলছেন সাড়ে তিন লাখ টাকা ধার করে আলু চাষ করেছিলেন। এখন সেই ঋণ শোধ করবেন কীভাবে? এই মানুষগুলোর জীবন কি এই সরকারের কাছে কোনো মূল্যই রাখে না?

টিসিবির চেয়ারম্যান বলছেন, শিগগিরই কেনা শুরু হবে। দুই মাস হলো ঘোষণা দেওয়ার। এখনও শিগগির? এই শিগগির মানে আরও কত দিন? আরও কতজন কৃষককে সর্বস্বান্ত হতে হবে? তিনশো চল্লিশটা হিমাগারে কুড়ি লাখ টন আলু পড়ে আছে। প্রতিদিন দাম কমছে। প্রতিদিন কৃষকের লোকসান বাড়ছে। কিন্তু সরকারের কোনো তাড়া নেই।

আসলে তাড়া থাকবে কেন? ইউনুস আর তার দল তো ক্ষমতায় এসেছে দেশ চালাতে নয়, দেশ লুটতে। নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে যারা বসেছে, তাদের কাছে জবাবদিহিতার প্রশ্নই ওঠে না। কৃষক মরলে মরুক, কৃষি খাত ধ্বংস হলে হোক, তাতে তাদের কী যায় আসে? তারা তো জানে এই আসনটা অস্থায়ী। তাই যতদিন আছে ততদিন নিজেদের আর প্রভুদের পকেট ভরাই আসল কাজ।

বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন তিনটা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। কৃষককে প্রণোদনা চেয়েছে। কিন্তু কোন প্রণোদনা দেওয়া হবে, সেটা স্পষ্ট করা হয়নি। এটাই এই সরকারের চরিত্র। সবকিছু অস্পষ্ট, সবকিছু ধোঁয়াশা। আর এই ধোঁয়াশার মধ্যেই চলছে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা আর কৃষকের সর্বনাশ।

কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম যা বলেছেন, সেটাই মূল কথা। সরকারের হস্তক্ষেপ সময়মতো ও বাস্তবসম্মত না হওয়ায় কৃষকরা বিপর্যস্ত। ঘোষিত ন্যূনতম দাম কার্যকর হয়নি। ফলে উৎপাদকরা নিরুৎসাহিত হয়েছে। এবার যে লোকসান হলো, তাতে আগামী মৌসুমে অনেক কৃষকই আলু চাষ ছেড়ে দেবে। আর তখন কী হবে? আবার দাম লাফিয়ে সত্তর আশি টাকা হবে। আর তখন সাধারণ মানুষ কষ্ট পাবে। এটাই এই সরকারের কৃষিনীতি। একবার দাম বাড়ে, একবার কমে। একবার কৃষক মরে, একবার ভোক্তা মরে। আর মধ্যখানে মুনাফা করে যায় একটা বিশেষ গোষ্ঠী।

হিমাগার মালিকরা বলছেন, যদি প্রণোদনা না পাওয়া যায়, তাহলে কৃষকরা আলুবীজ বিক্রি করে দেবে খাবার আলু হিসেবে। নয় লাখ টন আলুবীজ। এটা বিক্রি হয়ে গেলে আগামী মৌসুমে উৎপাদন কমে যাবে। আর তখন আবার সংকট। এই চক্র থেকে বেরোনোর কোনো পথ নেই যতদিন না সরকার দায়িত্বশীল হচ্ছে। কিন্তু যে সরকার নিজেই দায়িত্বহীনভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তারা দায়িত্ব নেবে কীভাবে?

একটা বিষয় পরিষ্কার করা দরকার। এই সংকট কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়। এটা পুরোপুরি মনুষ্যসৃষ্ট। পরিকল্পনাহীনতা, উদাসীনতা আর ইচ্ছাকৃত অবহেলার ফসল। একদিকে কৃষককে উৎসাহিত করা হয়নি, অন্যদিকে উদ্বৃত্ত ব্যবস্থাপনার কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। রপ্তানি বাজার সৃষ্টি করা হয়নি। আলুভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার কোনো উদ্যোগ নেই। শুধু ঘোষণা দিয়ে কৃষককে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে।

আর এই ধোঁকার রাজনীতিতে যারা পারদর্শী, তারাই তো এখন ক্ষমতায়। সুদী মহাজন ইউনুস, যার পুরো ক্যারিয়ার দরিদ্রদের ঋণের ফাঁদে ফেলে টাকা কামানোর ওপর দাঁড়িয়ে, তিনি কৃষকের স্বার্থ দেখবেন, এটা আশা করাটাই বোকামি। তার কাছে কৃষক মানে আরেকটা ঋণগ্রহীতা, আরেকটা সুদ আদায়ের উৎস। তাদের কষ্ট, তাদের যন্ত্রণা, তাদের মরণ, এসব তার হিসাবের খাতায় ঢোকে না।

যে সরকার বিদেশী রাষ্ট্রের অর্থায়নে, ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনের সহায়তায় আর সামরিক বাহিনীর মদদে ক্ষমতায় এসেছে, তাদের কাছে দেশের কৃষক, দেশের কৃষি, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কখনোই অগ্রাধিকার হবে না। তাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে যারা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে তাদের সন্তুষ্ট করা। আর সেজন্য দেশের যত ক্ষতিই হোক, কৃষক যত কষ্টেই থাকুক, তাতে তাদের কিছু যায় আসে না।

এই মুহূর্তে দেশের তিনশো চল্লিশটা হিমাগারে কুড়ি লাখ টন আলু পচছে, দাম কমছে, কৃষক নিঃস্ব হচ্ছে। আর ক্ষমতার গদিতে বসে ইউনুস আর তার দল ভাবছে পরবর্তী লুটের পরিকল্পনা নিয়ে। আলু নিয়ে কে মাথা ঘামাবে? ক্ষমতা পেয়েছি, মারি তো গন্ডার লুটি তো ভাণ্ডার। এটাই এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতায় কৃষক শুধু একটা পরিসংখ্যান, একটা সংখ্যা, যার মৃত্যু বা জীবন কারো কাছে কোনো বিবেচ্য বিষয়ই নয়।

আগস্টের ২৭ তারিখে কৃষি মন্ত্রণালয় যখন ঘোষণা দিলো পঞ্চাশ হাজার টন আলু কিনবে, হিমাগারে ন্যূনতম দাম হবে বাইশ টাকা, তখন এই দেশের আলুচাষিরা হয়তো শেষবারের মতো একটু আশ্বস্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলো, একটা আলুও কেনা হলো না। এটা কি শুধুই অদক্ষতা, নাকি সুপরিকল্পিত উদাসীনতা? যে সরকার বিদেশী টাকা আর সামরিক সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তাদের কাছে কৃষকের আর্তনাদ কেন পৌঁছাবে?

প্রশ্নটা হচ্ছে, ঘোষণা দেওয়ার দুই মাস পরেও একটা আলু কেনা না হলে সেই ঘোষণার মূল্য কী? এটা তো স্রেফ মিথ্যাচার। আর এই মিথ্যাচারের খেসারত দিচ্ছে দেশের লাখো কৃষক পরিবার। যেখানে উৎপাদন খরচ ছাব্বিশ থেকে আঠাশ টাকা, সেখানে আলু বিকোচ্ছে আট থেকে এগারো টাকায়। মুন্সীগঞ্জে ক্ষতির পরিমাণ দুই হাজার পঁয়ত্রিশ কোটি টাকা, রংপুরে দুই হাজার কোটি, জয়পুরহাটে একশো সাতাত্তর কোটি। এগুলো শুধু সংখ্যা নয়, এর পেছনে আছে অসংখ্য পরিবারের বেঁচে থাকার সংগ্রাম।

কিন্তু যে সরকার নিজেই অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তারা কৃষকের বৈধ পাওনা নিয়ে মাথা ঘামাবে কেন? ইউনুস আর তার তথাকথিত উপদেষ্টারা যেভাবে ক্ষমতায় এসেছেন, সেই প্রক্রিয়াতেই তো বোঝা যায় তাদের অগ্রাধিকার কোথায়। জুলাইয়ে দাঙ্গা বাঁধিয়ে, নির্বাচিত সরকারকে ক্যু করে ফেলে দিয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তাদের কাছে দেশের কৃষি খাত, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কি আদৌ কোনো বিবেচ্য বিষয়?

দেখুন বাস্তবতা। গত বছর নভেম্বরে যখন আলু সত্তর থেকে আশি টাকা কেজি ছিল, তখন কৃষক ভেবেছিল এবার হয়তো লাভ হবে। সেই আশায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় সাতান্ন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ করলো। চল্লিশ লাখ টন বেশি উৎপাদন হলো। কিন্তু এই উদ্বৃত্ত সামলানোর কোনো পরিকল্পনা কি ছিল? রপ্তানির বাজার খোঁজা হয়েছে? বাফার স্টক তৈরি করা হয়েছে? কিছুই না। বরং ঘোষণা দিয়ে কৃষককে আশ্বস্ত করার নাটক করে, তারপর দুই মাস ধরে হাত গুটিয়ে বসে থাকা হয়েছে।

আর এদিকে কী হচ্ছে? বাইশ টাকার ঘোষণার আগে পাইকারিতে ষোলো থেকে সতেরো টাকায় আলু বিক্রি হতো। ঘোষণার পর দাম নামলো নয় থেকে এগারো টাকায়। এটা কীভাবে সম্ভব? সরকার যখন ন্যূনতম দাম ঘোষণা করে কিন্তু সেই দামে কেনে না, তখন বাজারে একটা ধারণা তৈরি হয় যে চাহিদা নেই, কেউ কিনবে না। ফলে দালাল আর মধ্যস্বত্বভোগীরা আরও কম দামে আলু কিনে নেয়। সরকারের এই ব্যর্থতা, নাকি এটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য? কৃষকের দুর্দশায় কারা লাভবান হচ্ছে, সেই প্রশ্নটা তো থেকেই যায়।

রাজশাহীর একজন চাষি বলছেন, তার হিমাগারে এক হাজার আড়াইশো বস্তা আলু পড়ে আছে, এক কেজিও বিক্রি হয়নি। মুন্সীগঞ্জের সাহারা বেগম, যার স্বামী অসুস্থ, তিন সন্তানের দায়িত্ব তার একার ঘাড়ে, বলছেন সাড়ে তিন লাখ টাকা ধার করে আলু চাষ করেছিলেন। এখন সেই ঋণ শোধ করবেন কীভাবে? এই মানুষগুলোর জীবন কি এই সরকারের কাছে কোনো মূল্যই রাখে না?

টিসিবির চেয়ারম্যান বলছেন, শিগগিরই কেনা শুরু হবে। দুই মাস হলো ঘোষণা দেওয়ার। এখনও শিগগির? এই শিগগির মানে আরও কত দিন? আরও কতজন কৃষককে সর্বস্বান্ত হতে হবে? তিনশো চল্লিশটা হিমাগারে কুড়ি লাখ টন আলু পড়ে আছে। প্রতিদিন দাম কমছে। প্রতিদিন কৃষকের লোকসান বাড়ছে। কিন্তু সরকারের কোনো তাড়া নেই।

আসলে তাড়া থাকবে কেন? ইউনুস আর তার দল তো ক্ষমতায় এসেছে দেশ চালাতে নয়, দেশ লুটতে। নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে যারা বসেছে, তাদের কাছে জবাবদিহিতার প্রশ্নই ওঠে না। কৃষক মরলে মরুক, কৃষি খাত ধ্বংস হলে হোক, তাতে তাদের কী যায় আসে? তারা তো জানে এই আসনটা অস্থায়ী। তাই যতদিন আছে ততদিন নিজেদের আর প্রভুদের পকেট ভরাই আসল কাজ।

বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন তিনটা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। কৃষককে প্রণোদনা চেয়েছে। কিন্তু কোন প্রণোদনা দেওয়া হবে, সেটা স্পষ্ট করা হয়নি। এটাই এই সরকারের চরিত্র। সবকিছু অস্পষ্ট, সবকিছু ধোঁয়াশা। আর এই ধোঁয়াশার মধ্যেই চলছে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা আর কৃষকের সর্বনাশ।

কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম যা বলেছেন, সেটাই মূল কথা। সরকারের হস্তক্ষেপ সময়মতো ও বাস্তবসম্মত না হওয়ায় কৃষকরা বিপর্যস্ত। ঘোষিত ন্যূনতম দাম কার্যকর হয়নি। ফলে উৎপাদকরা নিরুৎসাহিত হয়েছে। এবার যে লোকসান হলো, তাতে আগামী মৌসুমে অনেক কৃষকই আলু চাষ ছেড়ে দেবে। আর তখন কী হবে? আবার দাম লাফিয়ে সত্তর আশি টাকা হবে। আর তখন সাধারণ মানুষ কষ্ট পাবে। এটাই এই সরকারের কৃষিনীতি। একবার দাম বাড়ে, একবার কমে। একবার কৃষক মরে, একবার ভোক্তা মরে। আর মধ্যখানে মুনাফা করে যায় একটা বিশেষ গোষ্ঠী।

হিমাগার মালিকরা বলছেন, যদি প্রণোদনা না পাওয়া যায়, তাহলে কৃষকরা আলুবীজ বিক্রি করে দেবে খাবার আলু হিসেবে। নয় লাখ টন আলুবীজ। এটা বিক্রি হয়ে গেলে আগামী মৌসুমে উৎপাদন কমে যাবে। আর তখন আবার সংকট। এই চক্র থেকে বেরোনোর কোনো পথ নেই যতদিন না সরকার দায়িত্বশীল হচ্ছে। কিন্তু যে সরকার নিজেই দায়িত্বহীনভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তারা দায়িত্ব নেবে কীভাবে?

একটা বিষয় পরিষ্কার করা দরকার। এই সংকট কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়। এটা পুরোপুরি মনুষ্যসৃষ্ট। পরিকল্পনাহীনতা, উদাসীনতা আর ইচ্ছাকৃত অবহেলার ফসল। একদিকে কৃষককে উৎসাহিত করা হয়নি, অন্যদিকে উদ্বৃত্ত ব্যবস্থাপনার কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। রপ্তানি বাজার সৃষ্টি করা হয়নি। আলুভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার কোনো উদ্যোগ নেই। শুধু ঘোষণা দিয়ে কৃষককে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে।

আর এই ধোঁকার রাজনীতিতে যারা পারদর্শী, তারাই তো এখন ক্ষমতায়। সুদী মহাজন ইউনুস, যার পুরো ক্যারিয়ার দরিদ্রদের ঋণের ফাঁদে ফেলে টাকা কামানোর ওপর দাঁড়িয়ে, তিনি কৃষকের স্বার্থ দেখবেন, এটা আশা করাটাই বোকামি। তার কাছে কৃষক মানে আরেকটা ঋণগ্রহীতা, আরেকটা সুদ আদায়ের উৎস। তাদের কষ্ট, তাদের যন্ত্রণা, তাদের মরণ, এসব তার হিসাবের খাতায় ঢোকে না।

যে সরকার বিদেশী রাষ্ট্রের অর্থায়নে, ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনের সহায়তায় আর সামরিক বাহিনীর মদদে ক্ষমতায় এসেছে, তাদের কাছে দেশের কৃষক, দেশের কৃষি, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কখনোই অগ্রাধিকার হবে না। তাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে যারা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে তাদের সন্তুষ্ট করা। আর সেজন্য দেশের যত ক্ষতিই হোক, কৃষক যত কষ্টেই থাকুক, তাতে তাদের কিছু যায় আসে না।

এই মুহূর্তে দেশের তিনশো চল্লিশটা হিমাগারে কুড়ি লাখ টন আলু পচছে, দাম কমছে, কৃষক নিঃস্ব হচ্ছে। আর ক্ষমতার গদিতে বসে ইউনুস আর তার দল ভাবছে পরবর্তী লুটের পরিকল্পনা নিয়ে। আলু নিয়ে কে মাথা ঘামাবে? ক্ষমতা পেয়েছি, মারি তো গন্ডার লুটি তো ভাণ্ডার। এটাই এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতায় কৃষক শুধু একটা পরিসংখ্যান, একটা সংখ্যা, যার মৃত্যু বা জীবন কারো কাছে কোনো বিবেচ্য বিষয়ই নয়।

আরো পড়ুন

সর্বশেষ