নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের ইতিহাসে যে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও আত্মমর্যাদার যুগের সূচনা হয়েছিল তার স্থপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে দীর্ঘ ১৬ বছর ছিল বাংলাদেশের স্বর্ণযুগ এমন এক সময়, যখন উন্নয়ন ছিল দৃশ্যমান, অর্থনীতি ছিল গতিশীল, আর জনগণ ছিল আত্মবিশ্বাসে উজ্জ্বল। আজ সেই নেতৃত্বের অনুপস্থিতিতে জাতি যেন হারিয়ে ফেলেছে দিকনির্দেশনা, স্থবির হয়ে পড়েছে অগ্রযাত্রা।
স্বপ্ন থেকে বাস্তবে অবকাঠামোর বাংলাদেশ
নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতু নয় এটি আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। তারই ধারাবাহিকতায় বাস্তবায়িত হয়েছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু টানেল, যমুনা রেলসেতু ও ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে যা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক রূপান্তর ঘটিয়েছে। নগর উন্নয়নের নিদর্শন হাতিরঝিল, পূর্বাচল ৩০০ ফিট ও থার্ড টার্মিনাল আজ উন্নত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।
শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার যুগ
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ হয়েছে উৎপাদন ও বিনিয়োগে সমৃদ্ধ এক অর্থনীতি। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ১১৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, চালু হয়েছে পায়রা, রামপাল ও মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প যা জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। রপ্তানি আয়, বৈদেশিক রিজার্ভ ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে বহুগুণে। মোবাইল ব্যাংকিং ও ডিজিটাল অর্থনীতি বাংলাদেশের আর্থিক খাতকে প্রযুক্তিনির্ভর নতুন যুগে প্রবেশ করিয়েছে।
জনকল্যাণে শেখ হাসিনা মডেল
শেখ হাসিনা সরকার শুধু অবকাঠামো নয় মানুষের জীবনে পরিবর্তন এনেছে। বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা, ইমাম, জেলে ও স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা এসব সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনকে করেছে সুরক্ষিত। ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণ, ভিজিএফ, ডিজিডি ও ওএমএস কর্মসূচি, এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প এসব উদ্যোগ জনগণের আস্থা অর্জন করেছে।
শিক্ষা ও মানবসম্পদে বিনিয়োগ
শিক্ষায় বিপ্লব ঘটিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। বিনামূল্যে বই বিতরণ, ২৬ হাজারেরও বেশি বিদ্যালয় সরকারিকরণ, কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন এসব পদক্ষেপ প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সমান সুযোগ তৈরি করেছে। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি এসব কর্মসূচি সমাজে সমতা ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করেছে।
স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের নবযুগ
দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বাংলাদেশের প্রযুক্তি ও চিকিৎসা খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এসব অর্জন প্রমাণ করে সুশাসন ও দূরদর্শী নেতৃত্ব থাকলে বাংলাদেশ পারে।
কূটনীতিতে বঙ্গবন্ধুর কন্যার সাফল্য
সমুদ্রসীমা বিজয়, ছিটমহল সমস্যার সমাধান এবং মানবিকতার উদাহরণ রোহিঙ্গা আশ্রয়দান এসব শেখ হাসিনার কূটনৈতিক প্রজ্ঞার ফসল। তিনি বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
আজ সেই উন্নয়নের গতিপথ যেন থেমে গেছে। অর্থনীতিতে মন্দা, বাজারে অস্থিরতা, কর্মসংস্থানের অভাব সব মিলিয়ে জনগণের মনে ফিরে এসেছে অনিশ্চয়তা। যে বাংলাদেশ এক সময় ছিল আত্মবিশ্বাসী, সেই দেশ আজ খুঁজছে নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা।
জাতির ইতিহাস প্রমাণ করে উন্নয়ন কখনো স্থবিরতায় টেকে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ছিলেন, আছেন, থাকবেন বাংলাদেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মুক্তচিন্তার প্রতীক। তাঁর নেতৃত্বেই আবার ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ, ফিরবে সমৃদ্ধির গতি ও মানুষের মুখে হাসি।

