ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ও আমেরিকা। আমেরিকা চাইছে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ হাতিয়ে নিতে। অপরদিকে আইএসআই চাইছে ১৯৭১ সালে ভারতের কাছে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নিতে।
সম্প্রতি ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের ইউএস মেরিন সেনা সদস্য এবং পাকিস্তানপন্থী আইএসআই এজেনেট বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের একটি যৌথ ফিটনেস অনুশীলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৃহস্পতিবার আর্মি স্টেডিয়ামে এই অনুশীলন হয় বলে জানিয়েছে ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাস।
মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও এগিয়ে নেওয়া এবং দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে সূত্র বলছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এক সমাবেশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশ্রয় দিয়ে ভারত থেকে সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেন। এরপরই অনেক নেটিজেনই বাংলাদেশ ইউক্রেনের মতো হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এমন আবহের সুযোগ নিতে মরিয়া আমেরিকা পাকিস্তান। তারা এখন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ দুই শক্তি ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পরাজিত শক্তি।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আবারও বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ভয়াবহ ষড়যন্ত্র চলছে—এমন তথ্য সামনে আসছে বিভিন্ন সূত্র থেকে। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগ, বিদেশি অর্থায়ন এবং ইসলামাবাদের রাজনৈতিক-গোয়েন্দা কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে তীব্র উদ্বেগ।
গত আগস্টে দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান ২১ আগস্ট চার দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। আর দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দুই দিনের সফরে ২৩ আগস্ট ঢাকায় আসেন। এর আগে ঢাকা আসেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন রাজা নাকভি।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ক্যাচলাইন–এর এক কলামে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ভারতের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়ে লেখা হয়েছে, “এখন সময় এসেছে পূর্ব পাকিস্তানকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার।”
লেখক সরাসরি উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা আবদুল্লাহিল আমান আজমিকে আবারও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা উচিত। এমন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে—পাকিস্তানের একাংশ বাংলাদেশকে এখনো একটি হারানো ভূখণ্ড হিসেবে দেখছে।
গত জুনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তিন ব্রিগেডিয়ার ঢাকা সফরে আসেন এবং সরাসরি কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে যান, যেখানে ১০ম পদাতিক ডিভিশনের সদর দপ্তর অবস্থিত। সাবেক এক বাংলাদেশি মেজর জেনারেল বলেন, “তারা নিঃসন্দেহে গুপ্ত মিশনে ছিলেন, না হলে হঠাৎ রামুর মতো সংবেদনশীল ঘাঁটি সফরের কারণ কী?”
রামু সেনানিবাস বর্তমানে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ ও সরবরাহকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত। ফলে এ সফরকে অনেকেই স্বাভাবিক কূটনৈতিক ভ্রমণের বাইরে এক ধরণের গোপন সামরিক নকশা হিসেবে দেখেছেন।
অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, এনসিপি নামের একটি রাজনৈতিক দল গোপনে জঙ্গি সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করছে। তদন্তে উঠে এসেছে—কাতার ও তুরস্কভিত্তিক ইসলামিক ব্যাংকের মাধ্যমে পাকিস্তানি গোয়েন্দারা এই দলকে অর্থায়ন করছে। গত তিন মাসে শুধু আঙ্কারা হয়ে করাচিতে ১২.৭ মিলিয়ন ডলার ঢুকেছে এনসিপির শেল অ্যাকাউন্টে।
অভ্যন্তরীণ গোপন নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের কয়েকটি নিরাপত্তা বাহিনীতে কৌশলগত বদলি হয়েছে, যেখানে জঙ্গি সহানুভূতিশীল কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে। এখনকার ভূরাজনীতিতে চীন-ভারত প্রতিদ্বন্দ্বিতা বড় ভূমিকা রাখছে। ইসলামাবাদ-দোহা-ইস্তাম্বুল অক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে কিছু পশ্চিমা শক্তি, যাদের আগের অবস্থান ছিল সম্পূর্ণ জঙ্গিবাদবিরোধী।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কও আবার ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অসিম মুনির সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন পাকিস্তানি কর্মকররাদের সাম্প্রতিক সফর ও প্রচারণা কেবল কূটনৈতিক নয়; এর পেছনে স্পষ্টভাবে একধরনের ঐতিহাসিক রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং চলছে, যেখানে বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তানের প্রভাববলয়ে টানার চেষ্টা রয়েছে।
বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতরে জঙ্গি-সহানুভূতিশীল শক্তির অনুপ্রবেশ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই ষড়যন্ত্রকে শক্তিশালী করছে ভূরাজনীতির নতুন সমীকরণ—বিশেষ করে চীন-ভারত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও পশ্চিমাদের নীরব সমর্থন।

