গাইবান্ধায় মাত্র এগারো মাসে একশত সত্তর জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এই সংখ্যাটা শুনে যদি গা শিউরে না ওঠে, তবে বুঝতে হবে আমরা মানুষ হিসাবে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। কিন্তু আরো ভয়াবহ বিষয় হলো, এই পরিসংখ্যান কেবলমাত্র একটি জেলার। সমগ্র বাংলাদেশে পরিস্থিতি কতটা ভয়ংকর, তা কল্পনা করতেও গা কাঁপে। আর এই দুর্দশার মাঝেই ক্ষমতায় বসে আছেন মহামান্য ড. ইউনুস ও তার তথাকথিত সংস্কার সরকার, যারা জুলাই মাসে দাঙ্গা লাগিয়ে, বিদেশী অর্থে পুষ্ট, ইসলামিক জঙ্গিদের সহায়তা নিয়ে এবং সামরিক বাহিনীর ছত্রছায়ায় একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করেছে।
জুলাইয়ের দাঙ্গার পর থেকে দেশে যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু। যখন একটি অবৈধ সরকার ক্যু করে ক্ষমতায় আসে, যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজনৈতিক প্রভুদের তাবেদারিতে ব্যস্ত থাকে, যখন সুশাসনের কোনো ধারণাই অবশিষ্ট থাকে না, তখন সমাজের দুর্বলতমরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়। গাইবান্ধার পরিসংখ্যান সেই নির্মম বাস্তবতারই প্রতিচ্ছবি।
ইউনুস সাহেব ও তার দল বড় বড় বক্তৃতা দেন সংস্কারের কথা বলে। কিন্তু মাটিতে নেমে দেখুন, সাধারণ মানুষের জীবনে কী পরিবর্তন এসেছে? একজন মা আজ তার মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে। একজন পিতা রাতে ঘুমাতে পারছে না কন্যার নিরাপত্তার চিন্তায়। এই কি সংস্কার? এই কি উন্নয়ন? যে সরকার দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই সরকারের বৈধতা কোথায়?
বিদেশী টাকায় পরিচালিত এই অবৈধ সরকার দেশে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, তার সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। পুলিশ ব্যস্ত রাজনৈতিক মামলা সামলাতে, আর সেই সুযোগে ধর্ষক ও নারী নির্যাতনকারীরা মুক্ত বিহারে ঘুরছে। গাইবান্ধায় দ্বিতীয় শ্রেণির শিশু ধর্ষণের শিকার হলো, পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধা নিরাপদ নয়, আর সরকারের কোনো খবর নেই। মামলা হচ্ছে, কিন্তু অধিকাংশ আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই কি শাসন? এই কি সুশাসন?
ইউনুস সাহেব নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ক্ষুদ্রঋণের জন্য, কিন্তু তিনি কি জানেন দেশের সাধারণ নারীরা আজ কী ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে? নাকি তিনি ব্যস্ত আছেন তার বিদেশী প্রভুদের সন্তুষ্ট রাখতে? সামরিক বাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় থাকা এই তথাকথিত সরকার কি কেবল ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই চেষ্টা করছে, নাকি দেশের মানুষের কল্যাণে কিছু করবে?
যে দেশে এগারো মাসে একটি জেলায় একশত সত্তর জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়, সেই দেশের শাসকদের কি লজ্জা হয় না? যে সরকার ক্যু করে ক্ষমতায় আসে, জঙ্গিদের সহায়তায় দাঙ্গা বাঁধায়, তাদের কাছে কি নৈতিকতার কোনো মূল্য আছে? ইউনুস সাহেব ও তার দল যতই বড় বড় কথা বলুন না কেন, বাস্তবতা হলো দেশে আইনের শাসন নেই, নিরাপত্তা নেই, নারীদের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান নেই।
এই অবৈধ সরকার নতুন আইন করেছে ধর্ষণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য। পনের দিনে তদন্ত, নব্বই দিনে বিচার সম্পন্ন করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আইন তো আগেও ছিল। আইন প্রয়োগ না হলে, অপরাধীরা যখন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মুক্ত থাকে, তখন শত আইন করে কী লাভ? গাইবান্ধার অধিকাংশ ধর্ষণ মামলায় আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ কী করছে? সরকার কী করছে? উত্তর শূন্য।
ইসলামিক জঙ্গিদের সহায়তায় ক্ষমতায় আসা এই সরকার কি নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে? যে দেশে মৌলবাদী শক্তির প্রভাব বাড়ছে, যেখানে নারীদের স্বাধীনতা ও অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে প্রতিনিয়ত, সেখানে নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে কী করে? ইউনুস সাহেব ও তার সরকার যদি সত্যিই দেশের মঙ্গল চাইত, তবে তারা আইনানুগভাবে ক্ষমতায় আসতেন, দাঙ্গা বাঁধিয়ে নয়।
গাইবান্ধার পরিস্থিতি সমগ্র দেশের জন্য সতর্কসংকেত। কিন্তু সতর্কসংকেত শোনার মতো কেউ কি ক্ষমতায় আছেন? যারা বিদেশী অর্থে ক্ষমতায় এসেছেন, যারা সামরিক সমর্থনে টিকে আছেন, তারা কি সাধারণ মানুষের কথা শুনবেন? নাকি তারা ব্যস্ত থাকবেন নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে?
বাংলাদেশ আজ এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যেখানে নারীদের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান নেই। ঘরে নেই, বাইরে নেই, স্কুলে নেই, রাস্তায় নেই। এই দায় কার? এই দায় তাদের, যারা ক্যু করে ক্ষমতায় এসে দেশকে এই অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইউনুস সাহেব ও তার দল যতদিন এই অবৈধ শাসন চালাবেন, ততদিন পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। কারণ যে সরকারের ভিত্তিই অন্যায়ের ওপর, সেই সরকার ন্যায়বিচার দিতে পারে না।
গাইবান্ধায় একশত সত্তর জন নারী ও শিশুর ধর্ষণ শুধু একটি সংখ্যা নয়, এটা ইউনুস সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতার প্রমাণ। এই সরকার দেশকে যেখানে নিয়ে গেছে, সেখানে নারীরা নিরাপদ নয়, শিশুরা নিরাপদ নয়, কেউই নিরাপদ নয়। চমৎকার দেশ চালাচ্ছে ইউনুস গং! নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর হাতে দেশ পড়ে নারীদের জন্য কোনো স্থান অবশিষ্ট নেই। এই কি সেই সংস্কার, যার স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল? নাকি এটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য, দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া?

