ঝিনাইদহ এখন একটা মৃত্যুপুরী। ১৫ মাসে ৭০টা খুন। হিসাবটা করুন, প্রতি সপ্তাহে একটা করে মানুষ খুন হচ্ছে। চার বছরের শিশু সাইমার গলা কেটে বস্তাবন্দি করে ফেলে রাখা হয়েছে। দিনেদুপুরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে রাস্তায়। মা খুন হচ্ছেন নিজের ছেলের হাতুড়ির আঘাতে। এই যে নরকের চিত্র, এটা তৈরি হয়েছে মুহাম্মদ ইউনুসের অবৈধ সরকারের আমলে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে পরিকল্পিত দাঙ্গা বাঁধিয়ে, বিদেশি শক্তির টাকায় পরিচালিত সহিংসতা দিয়ে, ইসলামিক জঙ্গিদের ব্যবহার করে এবং সামরিক বাহিনীর সমর্থনে দেশের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা হয়েছিল। ক্ষমতায় বসেছেন সুদের ব্যবসায়ী ইউনুস, যার কোনো গণতান্ত্রিক বৈধতা নেই, যিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নন। আর তারপর থেকে দেশটা ধীরে ধীরে জঙ্গলে পরিণত হয়েছে, যেখানে আইনের শাসন বলে কিছু নেই, মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই।
ঝিনাইদহের চিত্র আসলে পুরো বাংলাদেশের চিত্র। এই জেলায় গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৯ জনকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে। ২১ জনকে কুপিয়ে, ৯ জনকে ছুরিকাঘাতে, ১২ জনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ১৪টা মরদেহ পাওয়া গেছে বিভিন্ন জায়গা থেকে, যাদের পরিচয়ই জানা যায়নি। চারজনকে তো নাম-পরিচয় ছাড়াই দাফন করে দিতে হয়েছে। এটা কি কোনো সভ্য রাষ্ট্রের চিত্র হতে পারে?
অপরাধ বিশ্লেষকরা খুব স্পষ্ট করে বলছেন কথাটা। বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে এই অবৈধ সরকারের আমলে। পুলিশ এখন নিষ্ক্রিয় একটা প্রতিষ্ঠান। আগস্টের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করতে পারছে না ঠিকমতো। অপরাধীরা জানে তাদের কিছু হবে না, তাই তারা দিনেদুপুরে মানুষ খুন করতে দ্বিধা করছে না। ইউনুসের এই তথাকথিত সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে ব্যস্ত, আর সাধারণ মানুষ মরছে রাস্তায়, ঘরে, প্রকাশ্যে।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন মানুষ এখন সন্ধ্যার পর রাস্তায় বের হতে ভয় পায়। দিনের বেলাতেও একা চলতে মানুষ আতঙ্কিত। এটাই তো চূড়ান্ত ব্যর্থতার প্রমাণ। একটা সরকার যদি নিজের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে সেই সরকারের অস্তিত্বের কী প্রয়োজন? কিন্তু ইউনুস তো কোনো নির্বাচিত সরকার নন। তিনি একজন ক্যু-এর মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী, যার কাছে জনগণের কোনো জবাবদিহিতা নেই।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার বলছেন শুধু পুলিশ কঠোর হলেই সমাধান হবে না, সমাজের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যে সরকার নিজেই অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে, যারা আইনের শাসনকে ধ্বংস করে ক্ষমতায় বসেছে, তাদের আমলে কীভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে? যে সরকার জঙ্গিদের সহায়তা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তারা কীভাবে জঙ্গিবাদ দমন করবে? যে সরকার বিদেশি শক্তির পুতুল, তারা কীভাবে দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে?
সত্যিটা হলো ইউনুসের এই অ-সরকার দেশটাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলেছে। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে দেশে যে অরাজকতা শুরু হয়েছে, তার দায় এই অবৈধ শাসকদের ওপরই বর্তায়। প্রতিটি খুন, প্রতিটি মৃত্যু, প্রতিটি অপরাধের জন্য দায়ী এই সরকার। যখন ক্ষমতায় আসার পদ্ধতিই হয় সহিংসতা আর অবৈধতার মাধ্যমে, তখন শাসনকালও হয় সহিংসতায় পূর্ণ।
চার বছরের সাইমার মৃত্যু শুধু একটা পরিসংখ্যান নয়। এটা একটা সভ্যতার মৃত্যু। এটা আইনের শাসনের মৃত্যু। এটা গণতন্ত্রের মৃত্যু। ইউনুসের অবৈধ শাসন যত দিন চলবে, এই মৃত্যুর মিছিল তত দীর্ঘ হবে। ঝিনাইদহ শুধু শুরু, সারা দেশেই এই অবস্থা। সুদের মহাজন এখন পুরো দেশকে একটা বিশাল সুদখোর কারবারের মতো চালাচ্ছেন, যেখানে সাধারণ মানুষের জীবন আর নিরাপত্তার কোনো দাম নেই। মানুষ এখন বুঝতে পারছে যে বিদেশি টাকায়, জঙ্গিদের সহায়তায় আর সামরিক ক্যু-এর মাধ্যমে যে সরকার আসে, সেই সরকার কখনোই জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। তারা শুধু নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ব্যস্ত থাকে, আর দেশ ধ্বংস হতে থাকে।

