সরকারি গাড়িতে এসে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) প্রভাষক পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস)। তার নাম আশিকুর রহমান। তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিজওয়ানার এপিএস হিসেবে কর্মরত আছেন।
নোবিপ্রবির সংস্থাপন শাখা সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। ওই বিজ্ঞপ্তির আলোকে পরীক্ষায় অংশ নিতে গতকাল শনিবার নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আসেন আশিকুর রহমান। পরীক্ষায় দুটি প্রভাষক পদের বিপরীতে আশিকুর রহমানসহ ২৭ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষা শেষে একই দিন ১৪ জনকে মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আশিকুর রহমান সরকারি লোগো ও ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডযুক্ত গাড়িতে করে ক্যাম্পাসে আসেন। পরীক্ষা শেষে একই গাড়িতে তিনি ঢাকায় ফিরে যান। ওই গাড়ির ছবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। বিষয়টি নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনুসন্ধান করে জানা যায়, উপদেষ্টার এপিএস আশিকুর রহমানের ব্যবহৃত গাড়িটি বন অধিদপ্তরের সহকারী প্রধান বন সংরক্ষক, আগারগাঁও, ঢাকার ঠিকানায় নিবন্ধিত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়োগ পরীক্ষার মতো প্রতিযোগিতামূলক ও সংবেদনশীল প্রক্রিয়ায় কোনো পরীক্ষার্থীর সরকারি গাড়িতে আগমন স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ সৃষ্টি করে। তিনি কি আসলেই সমান প্রতিযোগিতায় আছেন, নাকি ক্ষমতার কোনো সুবিধা পাচ্ছেন?
এমনকি তিনি যদি প্রকৃত যোগ্যতার ভিত্তিতেই পরীক্ষায় অংশ নেন, তবুও সরকারি সুবিধা ব্যবহার নৈতিক প্রশ্ন তৈরি করে এবং ন্যায্যতার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।
অভিযোগ রয়েছে, রিজওয়ানা আওয়ামী লীগের আমলে বিভিন্ন আবাসন প্রজেক্টের কাছ থেকে পরিবেশের দোহাই দিয়ে চাঁদা দাবি করতেন। অনেক কোম্পানি তাঁকে লাঞ্ছিতও করেছে এ ঘটনায়। তবে সরকারের আসার পর এবার তিনি বসুন্ধরা, যমুনাসহ বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের কাছ থেকে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া রিজওয়ানার নাম ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চাঁনমারিতে জমি দখলের চেষ্টা ও স্থানীয় পত্রিকা অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে শহরের আলোচিত সন্ত্রাসী রিন্টু বাহিনীর বিরুদ্ধ্বে।

