করোনাকালীন সময়ে ‘লকডাউন’ ছিল এক বৈশ্বিক বাস্তবতা, যা মানুষকে শিখিয়েছিল একে অপরের পাশে থাকা, নিয়ম মেনে টিকে থাকা, এবং প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার পাঠ। সেই সময় বাংলাদেশও আওয়ামী লীগ সরকারের দক্ষ নেতৃত্বে সাফল্যের সঙ্গে লকডাউন বাস্তবায়ন করেছিল। জনগণের জীবনরক্ষায় সরকারের কঠোর ও মানবিক পদক্ষেপ দেশকে নিরাপদ রেখেছিল, যা আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত হয়।
আজ ১৩ নভেম্বর, সেই পরিচিত শব্দ ‘লকডাউন’ আবারও ফিরে এসেছে—তবে এক নতুন অর্থে, এক নতুন লক্ষ্য নিয়ে। এবার এটি স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নয়, বরং জাতির আত্মরক্ষার জন্য। রাজধানী ঢাকার রাজপথ আজ নিস্তব্ধ, যানবাহন সীমিত, দোকানপাট বন্ধ, অফিসে উপস্থিতি কম। কিন্তু এই নীরবতা নিস্তব্ধ নয়—এর ভেতরে লুকিয়ে আছে জনতার গর্জন, অবৈধ ক্ষমতার বিরুদ্ধে ন্যায় ও গণতন্ত্রের জাগরণ।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ। তাদের একটাই দাবি—অবৈধ সরকার প্রধান ড. ইউনুসের পদত্যাগ এবং সংবিধান লঙ্ঘনের কঠোর বিচার। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লোপাট, প্রশাসনকে রাজনৈতিক অস্ত্রে পরিণত করা, এবং বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করতে দেশের স্বার্থ বিসর্জনের অভিযোগে জাতি আজ একসঙ্গে বলছে—“এই অন্যায়ের শেষ চাই।” দেশের ৮০ ভাগ মানুষ এখন স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিচ্ছে, জনগণের ভোট ছাড়া কোনো ক্ষমতা বৈধ নয়।
দেশে আজ ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। জঙ্গী উত্থান, মব সন্ত্রাস, খুন-খারাবি, দখল ও ভয় দেখানো রাজনীতি চলছে সরকারের প্রশ্রয়ে। সাধারণ মানুষ দারিদ্র্যের জালে জর্জরিত, কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছে না, শ্রমিকের ঘরে চুলা জ্বলছে না, ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী মগ্ন ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার ষড়যন্ত্রে।
এদিকে বিএনপি-জামাতের দেশবিরোধী রাজনীতি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। গুজব, বিভ্রান্তি আর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে। কিন্তু জনতা আজ সজাগ—তারা জানে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগই পারে এই দেশকে আবার ঘুরে দাঁড়াতে, দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষা করতে।
এই ১৩ নভেম্বরের লকডাউন তাই কেবল রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়—এটি জনগণের জাগরণের প্রতীক, অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক প্রতিবাদ। ঢাকার নীরব রাজপথ যেন সাক্ষী হয়ে আছে জনতার দৃঢ় সংকল্পের—দেশ বাঁচাতে হলে অবৈধ শাসনের অবসান ঘটাতেই হবে।
রাজপথের প্রতিটি নীরব পদক্ষেপ আসলে একটি উচ্চারণ—“ন্যায় চাই, অধিকার চাই, গণতন্ত্র চাই।” জনগণের এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন আজ প্রমাণ করছে, বাংলাদেশ কোনো দখলদার রাজনীতির বন্দি নয়, বরং এটি মুক্ত মানুষের দেশ, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রের প্রতীক।
বাংলাদেশের আকাশে আজ নতুন ভোরের আভা। এই লকডাউন হয়ে উঠেছে মুক্তির আন্দোলন—অবৈধ ক্ষমতার বিরুদ্ধে জাতির ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ, এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নতুন অভিযাত্রার সূচনা।

