ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে গত ১৮ অক্টোবর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর অক্ষত স্ট্রংরুমের ভল্ট থেকে অন্তত ৭টি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম৪ কারবাইন রাইফেল এবং ব্রাজিলের টরাস কোম্পানির সেমি-অটোমেটিক পিস্তল। গত রোববার (২৬ অক্টোবর) নিয়মিত পরিদর্শনের সময় ভল্টের লক খোলা এবং ট্রাংক ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রথম পরিদর্শনে (২৪ অক্টোবর) ২১টি অস্ত্র পাওয়া গেলেও দ্বিতীয় দফায় ৭টি নিখোঁজ ধরা পড়ে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মো. জামাল হোসেন ২৮ অক্টোবর বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশের সিআইডি ফরেনসিক দল তালা কাটার সরঞ্জামসহ আলামত সংগ্রহ করেছে। অগ্নিকাণ্ডে সিসিটিভি ক্যামেরা পুড়ে যাওয়ায় কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। অবশিষ্ট ১৪টি অস্ত্র সোমবার থানায় স্থানান্তরিত হয়েছে।
বিমানবন্দর নিরাপত্তা বিভাগের সূত্র জানায়, ভল্টে পুলিশের সোয়াট ইউনিট ও বৈধ ব্যবসায়ীদের আমদানি করা অস্ত্র সংরক্ষিত ছিল। সোনা-হীরা বাদ দিয়ে শুধু আগ্নেয়াস্ত্র চুরি রহস্যজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বলেন, “নির্বাচন বানচালের জন্য দেশের ভেতর থেকে এবং বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে চেষ্টা হবে। হঠাৎ করে আক্রমণ আসতে পারে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ইউনূসের মুখ ফসকে বেরোনো সত্য। পশ্চিমা শক্তি আমেরিকার ‘মিশন’ অসম্পূর্ণ থাকায় ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায় না।
ইউনূসের প্রিয় দল জামায়াতে ইসলামী এবং তার গড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচন ভণ্ডুলে তৎপর। এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম রংপুরে বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব নয়।”
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের গণভোটের দাবি জানান, যাতে সনদের প্রস্তাব সংবিধানে বাধ্যতামূলক হয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ: নতুন সংসদ প্রথম ২৭০ দিন (৯ মাস) সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি লোকদেখানো গণভোট। ইউনূস নির্বাচন পিছিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চান এবং আমেরিকাকে চট্টগ্রাম বন্দর ও সেন্টমার্টিন হস্তান্তর করতে যাচ্ছেন।
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিএমএ ভবনে বলেন, “সবাই সংঘাতের জন্য মুখিয়ে আছে। অল্প কয়েক মাসে দেখতে পাবেন। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ যুক্ত হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
সূত্র জানায়, গুজব সেলের প্রধান পিনাকী ভট্টাচার্য ও ইলিয়াস হোসেনের নির্দেশে জুলাই আন্দোলনে গুলি চালানো জঙ্গিরা ঢাকায় অবস্থান করছে। টার্গেট: নির্বাচন না হতে দেওয়া। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন, ৭টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৮৮৫০ জনকে কারাতে, জুডো, তায়কোয়ান্ডো ও আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরইমধ্যে এ প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি বিমানবন্দর রেলস্টেশনে রাজশাহী থেকে জঙ্গিদের জন্য আনা অস্ত্র জব্দ করা হয়। এছাড়া দেশের একের পর এক অগ্নিকাণ্ড ও দুর্ঘটনা—ফার্মগেটে মেট্রোরেল বিয়ারিং পড়ে যুবক নিহত, চট্টগ্রাম উড়ালসড়ক থেকে নাটবল্টু চুরি, সিরাজগঞ্জ সোলার প্লান্ট থেকে কোটি টাকার তামার তার লুট, তিস্তা সেতুর তার-রিফ্লেক্টর চুরি দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি অংশ। পাশপাশি ইনসেপ্টা ফার্মা, চট্টগ্রাম ইপিজেড কারখানা, ঘাটাইল সূতা মিল, মিরপুর কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের ঘটনাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মিরপুরের আগুনে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দরের কার্গো আগুনে ১০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ ও বহির্শক্তির সমন্বিত ষড়যন্ত্রে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত। নির্বাচন বাঁচাতে সতর্কতা জরুরি।

