Wednesday, October 29, 2025

যে প্রশ্নগুলো এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই, যে প্রশ্নগুলো আমাদের করতেই হবে

‘৭৫ এর ১৫ই আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ যা দেখেছে, তা কোনো কিচ্ছা-গল্প নয়। একটা পরিবারকে সপরিবারে খুন করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা এ দেশকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল, সেটা তো আমরা সবাই জানি। জিয়া থেকে এরশাদ, তারপর খালেদা জিয়ার আমল – এই পুরো সময়টা ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে একটা দীর্ঘ যুদ্ধ। যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করা হলো, ধর্মের নামে মানুষকে বিভক্ত করা হলো, রাজাকারদের মন্ত্রী বানানো হলো।

২০০৮ সালের পর যখন আবার ক্ষমতায় আসা হলো, তখন কেউ ভাবেনি একটানা পনেরো বছরের বেশি দেশ চালানো সম্ভব হবে। কিন্তু হয়েছে। কারণ মানুষ দেখেছে তফাতটা। পদ্মা সেতু দেখেছে, মেট্রোরেল দেখেছে, বিদ্যুৎ পেয়েছে ঘরে ঘরে। গ্রামের মেয়েরা স্কুলে যেতে পেরেছে, দরিদ্র মানুষ ভাতের নিশ্চয়তা পেয়েছে। হলি আর্টিজানের পর জঙ্গিবাদকে এমনভাবে দমন করা হয়েছে যে, তারা মাথা তুলতে পারেনি। এগুলো কি মুখের কথা? এগুলো বাস্তব, যা মানুষ নিজের চোখে দেখেছে।

এখন যা হলো জুলাইয়ে, সেটা নিয়ে যারা উচ্ছ্বসিত, তারা আসলে কী দেখছেন? একটা নির্বাচিত সরকারকে – সেই সরকার যত খারাপই হোক, জোর করে সরিয়ে দেওয়া কি গণতন্ত্র? রাস্তায় মানুষ মেরে, ভাঙচুর করে, পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে, সংসদ ভবনে হামলা চালিয়ে ক্ষমতা দখল করাটা কি কোনো সভ্য দেশে মেনে নেওয়া হয়? আর এর পেছনে কারা ছিল, সেটাও তো আমরা জানি। বিদেশি টাকা, জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার, আর সেনাবাহিনীর নীরব সমর্থন – এসব ছাড়া এই ক্যু করা কি সম্ভব ছিল?

ইউনূস সাহেবের জ্ঞান-প্রজ্ঞা নিয়ে অনেকে মুগ্ধ। নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু ক্ষুদ্রঋণের নামে দরিদ্র মানুষকে আরও দরিদ্র বানানোর যে অভিযোগ, সেগুলো কি একেবারেই ভিত্তিহীন? আর রাজনীতিতে তো তিনি কখনো জনগণের কাছে যাননি। ভোট চাননি। কোনো নির্বাচনে দাঁড়াননি। অথচ আজ তিনি সরকার প্রধান। এটা কোন গণতন্ত্র? এটা তো সামরিক বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় ক্ষমতা দখল। অন্য নাম যাই দেওয়া হোক, এটা ক্যু।

আর সেনাপ্রধান ওয়াকার? তিনি তো সংবিধান মানার শপথ নিয়েছিলেন। নির্বাচিত সরকারকে রক্ষা করা তার দায়িত্ব ছিল। কিন্তু তিনি কী করলেন? চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন যখন সরকারকে উৎখাত করা হচ্ছিল। এটা কি দেশপ্রেম, নাকি ক্ষমতালোভ? সেনাবাহিনীকে রাজনীতির বাইরে রাখার জন্য যত আইন-কানুন, সব লঙ্ঘন করা হলো। আর কেউ কিছু বলল না।

যারা এখন উপদেষ্টা হয়ে বসে আছেন, তাদের মধ্যে কয়জন সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেছেন কখনো? কয়জন গ্রামে গিয়ে কৃষকের কষ্ট দেখেছেন? কয়জন শ্রমিকের সাথে একটা দিন কাটিয়েছেন? তারা সবাই খুব শিক্ষিত, বিদেশী নাগরিক, ইংরেজিতে সাবলীল। কিন্তু বাংলাদেশের মাটি আর মানুষকে চেনেন কতটুকু? প্রজ্ঞা-জ্ঞান তো বইয়ে পড়ে আসে না, আসে মানুষের সাথে থেকে, তাদের সুখ-দুঃখ বুঝে।

এই দেশের সাধারণ মানুষ কিন্তু বোকা নয়। তারা বুঝতে পারে কখন দেশ এগোচ্ছে, কখন পিছোচ্ছে। তারা দেখেছে কোন সরকারের আমলে তাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে, কখন বেকার বসে থাকতে হচ্ছে। তারা জানে কখন বাজারে দাম সহনীয় ছিল, কখন হাত পুড়ে গেছে। আর তারা এটাও জানে যে প্রতিবার যখন ভোট হয়েছে, তারা কাকে বেছে নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ নয়বার সরকার গঠন করেছে। প্রতিবারই ভোটের মাধ্যমে। এটা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়। মানুষ যখন ভোট দিয়েছে, তখন তারা জেনেশুনেই দিয়েছে। হয়তো সব সময় আওয়ামী লীগ নিখুঁত ছিল না, ভুলও হয়েছে। কিন্তু বিকল্প কী ছিল? বিএনপি-জামায়াতের জোট? যারা দেশকে পাকিস্তানের দিকে টেনে নিয়ে যেতে চায়? যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে মরিয়া?

এখন যে সরকার বসেছে, তাদের বৈধতা কোথায়? তারা বলছেন সংস্কার করবেন। কী সংস্কার? কে ঠিক করবে কোনগুলো সংস্কার দরকার? জনগণকে তো জিজ্ঞেস করা হয়নি। ভোট তো নেওয়া হয়নি। তাহলে তাদের কর্তৃত্ব আসছে কোথা থেকে? সেনাবাহিনীর বন্দুক থেকে।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো টেকসই গণতন্ত্র হয়নি কখনো। এটা ইতিহাস। ১৯৫৪ থেকে শুরু করে ২০২৪ পর্যন্ত যতবার মানুষ সুযোগ পেয়েছে, ততবার তারা আওয়ামী লীগকেই বেছে নিয়েছে। কারণ এই দলটা গড়েছেন বঙ্গবন্ধু, যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এই দলের শেকড় বাংলাদেশের মাটিতে। অন্য দলগুলো হয় পাকিস্তানের ভূত বয়ে বেড়ায়, না হয় সামরিক শাসকদের তৈরি করে দেওয়া দল।

এখন প্রশ্ন হলো, এই অবৈধ সরকার কতদিন টিকবে? আর টিকলেও দেশের কী হবে? অর্থনীতি তো ধসে পড়ছে। বিনিয়োগ আসছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ। সংখ্যালঘুরা আতঙ্কে। জঙ্গিরা আবার মাথা তুলছে। এই সবকিছুর দায় কে নেবে? ইউনূস সাহেব? উপদেষ্টারা? সেনাপ্রধান?

বাংলাদেশের মানুষ একটা জিনিস ভালো করেই বুঝে, শান্তি আর উন্নয়ন চাইলে গণতন্ত্র লাগে। আর গণতন্ত্র মানে ভোট, নির্বাচন, জনগণের রায়। রাস্তায় মানুষ পিটিয়ে, ভাঙচুর করে, সামরিক বাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতা দখল করে, পুলিশ মেরে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লুট করে আগুন দিয়ে যে সরকার গঠন, সেটা কখনো টেকে না। ইতিহাস এটাই বলে।

‘৭৫ এর ১৫ই আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ যা দেখেছে, তা কোনো কিচ্ছা-গল্প নয়। একটা পরিবারকে সপরিবারে খুন করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা এ দেশকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল, সেটা তো আমরা সবাই জানি। জিয়া থেকে এরশাদ, তারপর খালেদা জিয়ার আমল – এই পুরো সময়টা ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে একটা দীর্ঘ যুদ্ধ। যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করা হলো, ধর্মের নামে মানুষকে বিভক্ত করা হলো, রাজাকারদের মন্ত্রী বানানো হলো।

২০০৮ সালের পর যখন আবার ক্ষমতায় আসা হলো, তখন কেউ ভাবেনি একটানা পনেরো বছরের বেশি দেশ চালানো সম্ভব হবে। কিন্তু হয়েছে। কারণ মানুষ দেখেছে তফাতটা। পদ্মা সেতু দেখেছে, মেট্রোরেল দেখেছে, বিদ্যুৎ পেয়েছে ঘরে ঘরে। গ্রামের মেয়েরা স্কুলে যেতে পেরেছে, দরিদ্র মানুষ ভাতের নিশ্চয়তা পেয়েছে। হলি আর্টিজানের পর জঙ্গিবাদকে এমনভাবে দমন করা হয়েছে যে, তারা মাথা তুলতে পারেনি। এগুলো কি মুখের কথা? এগুলো বাস্তব, যা মানুষ নিজের চোখে দেখেছে।

এখন যা হলো জুলাইয়ে, সেটা নিয়ে যারা উচ্ছ্বসিত, তারা আসলে কী দেখছেন? একটা নির্বাচিত সরকারকে – সেই সরকার যত খারাপই হোক, জোর করে সরিয়ে দেওয়া কি গণতন্ত্র? রাস্তায় মানুষ মেরে, ভাঙচুর করে, পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে, সংসদ ভবনে হামলা চালিয়ে ক্ষমতা দখল করাটা কি কোনো সভ্য দেশে মেনে নেওয়া হয়? আর এর পেছনে কারা ছিল, সেটাও তো আমরা জানি। বিদেশি টাকা, জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার, আর সেনাবাহিনীর নীরব সমর্থন – এসব ছাড়া এই ক্যু করা কি সম্ভব ছিল?

ইউনূস সাহেবের জ্ঞান-প্রজ্ঞা নিয়ে অনেকে মুগ্ধ। নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু ক্ষুদ্রঋণের নামে দরিদ্র মানুষকে আরও দরিদ্র বানানোর যে অভিযোগ, সেগুলো কি একেবারেই ভিত্তিহীন? আর রাজনীতিতে তো তিনি কখনো জনগণের কাছে যাননি। ভোট চাননি। কোনো নির্বাচনে দাঁড়াননি। অথচ আজ তিনি সরকার প্রধান। এটা কোন গণতন্ত্র? এটা তো সামরিক বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় ক্ষমতা দখল। অন্য নাম যাই দেওয়া হোক, এটা ক্যু।

আর সেনাপ্রধান ওয়াকার? তিনি তো সংবিধান মানার শপথ নিয়েছিলেন। নির্বাচিত সরকারকে রক্ষা করা তার দায়িত্ব ছিল। কিন্তু তিনি কী করলেন? চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন যখন সরকারকে উৎখাত করা হচ্ছিল। এটা কি দেশপ্রেম, নাকি ক্ষমতালোভ? সেনাবাহিনীকে রাজনীতির বাইরে রাখার জন্য যত আইন-কানুন, সব লঙ্ঘন করা হলো। আর কেউ কিছু বলল না।

যারা এখন উপদেষ্টা হয়ে বসে আছেন, তাদের মধ্যে কয়জন সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেছেন কখনো? কয়জন গ্রামে গিয়ে কৃষকের কষ্ট দেখেছেন? কয়জন শ্রমিকের সাথে একটা দিন কাটিয়েছেন? তারা সবাই খুব শিক্ষিত, বিদেশী নাগরিক, ইংরেজিতে সাবলীল। কিন্তু বাংলাদেশের মাটি আর মানুষকে চেনেন কতটুকু? প্রজ্ঞা-জ্ঞান তো বইয়ে পড়ে আসে না, আসে মানুষের সাথে থেকে, তাদের সুখ-দুঃখ বুঝে।

এই দেশের সাধারণ মানুষ কিন্তু বোকা নয়। তারা বুঝতে পারে কখন দেশ এগোচ্ছে, কখন পিছোচ্ছে। তারা দেখেছে কোন সরকারের আমলে তাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে, কখন বেকার বসে থাকতে হচ্ছে। তারা জানে কখন বাজারে দাম সহনীয় ছিল, কখন হাত পুড়ে গেছে। আর তারা এটাও জানে যে প্রতিবার যখন ভোট হয়েছে, তারা কাকে বেছে নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ নয়বার সরকার গঠন করেছে। প্রতিবারই ভোটের মাধ্যমে। এটা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়। মানুষ যখন ভোট দিয়েছে, তখন তারা জেনেশুনেই দিয়েছে। হয়তো সব সময় আওয়ামী লীগ নিখুঁত ছিল না, ভুলও হয়েছে। কিন্তু বিকল্প কী ছিল? বিএনপি-জামায়াতের জোট? যারা দেশকে পাকিস্তানের দিকে টেনে নিয়ে যেতে চায়? যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে মরিয়া?

এখন যে সরকার বসেছে, তাদের বৈধতা কোথায়? তারা বলছেন সংস্কার করবেন। কী সংস্কার? কে ঠিক করবে কোনগুলো সংস্কার দরকার? জনগণকে তো জিজ্ঞেস করা হয়নি। ভোট তো নেওয়া হয়নি। তাহলে তাদের কর্তৃত্ব আসছে কোথা থেকে? সেনাবাহিনীর বন্দুক থেকে।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো টেকসই গণতন্ত্র হয়নি কখনো। এটা ইতিহাস। ১৯৫৪ থেকে শুরু করে ২০২৪ পর্যন্ত যতবার মানুষ সুযোগ পেয়েছে, ততবার তারা আওয়ামী লীগকেই বেছে নিয়েছে। কারণ এই দলটা গড়েছেন বঙ্গবন্ধু, যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এই দলের শেকড় বাংলাদেশের মাটিতে। অন্য দলগুলো হয় পাকিস্তানের ভূত বয়ে বেড়ায়, না হয় সামরিক শাসকদের তৈরি করে দেওয়া দল।

এখন প্রশ্ন হলো, এই অবৈধ সরকার কতদিন টিকবে? আর টিকলেও দেশের কী হবে? অর্থনীতি তো ধসে পড়ছে। বিনিয়োগ আসছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ। সংখ্যালঘুরা আতঙ্কে। জঙ্গিরা আবার মাথা তুলছে। এই সবকিছুর দায় কে নেবে? ইউনূস সাহেব? উপদেষ্টারা? সেনাপ্রধান?

বাংলাদেশের মানুষ একটা জিনিস ভালো করেই বুঝে, শান্তি আর উন্নয়ন চাইলে গণতন্ত্র লাগে। আর গণতন্ত্র মানে ভোট, নির্বাচন, জনগণের রায়। রাস্তায় মানুষ পিটিয়ে, ভাঙচুর করে, সামরিক বাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতা দখল করে, পুলিশ মেরে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লুট করে আগুন দিয়ে যে সরকার গঠন, সেটা কখনো টেকে না। ইতিহাস এটাই বলে।

আরো পড়ুন

সর্বশেষ