Friday, December 19, 2025

তারেকের দেশে ফেরার আগে লন্ডনে জামায়াত আমির: সমঝোতা নাকি গোপন ষড়যন্ত্রের ছক?

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একের পর এক অস্থিরতার মধ্যে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের হঠাৎ লন্ডন সফর। ঠিক যখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ২৫ ডিসেম্বর, তখনই জামায়াতের শীর্ষ নেতার এই যাত্রা রাজনৈতিক মহলে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এটা কি বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে নির্বাচনী সমঝোতার গোপন প্রস্তুতি? নাকি আসন্ন ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে অস্থিরতা বাড়িয়ে দেশকে অচল করার গভীর ষড়যন্ত্র?

গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়ে লন্ডনে পৌঁছান ডা. শফিকুর রহমান। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সফরের উদ্দেশ্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক এবং কয়েকটি কর্মসূচি। লন্ডনের কর্মসূচি শেষে তিনি সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করবেন এবং ২১ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন। কিন্তু এই আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। বিশেষ করে তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণার মাত্র কয়েকদিন আগে এই সফর অত্যন্ত সন্দেহজনক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি-জামায়াতের দীর্ঘদিনের জোট যদিও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে গেছে এবং দুই দল এখন প্রতিদ্বন্দ্বী, তবু লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশে গোপন সমঝোতার চেষ্টা চলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনে আসন বণ্টন বা যৌথ কৌশল নিয়ে আলোচনা হতে পারে এই সফরে। যদিও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো তথ্য তার কাছে নেই—এই উত্তরই রহস্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই সফরের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে আরেকটি গুরুতর ঘটনা—নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরদিন (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে দিনদুপুরে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির উপর নৃশংস গুলিবর্ষণ। বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত এবং এর পেছনে সংগঠিত নেটওয়ার্ক রয়েছে। ঢাকা-৮ আসনটি চাঁদাবাজি ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত, যেখানে বছরে ৪৫০-৫৫০ কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

হামলার মাত্র কয়েক মিনিট পর জামায়াত-ঘনিষ্ঠ ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আবু সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্ট আরও বিতর্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি লিখেছেন: “ওসমান হাদিকে গুলি করা হলো। চাঁদাবাজ ও গ্যাংস্টারদের কবল থেকে ঢাকা সিটিকে মুক্ত করতে অচিরেই আমাদের অভ্যুত্থান শুরু হবে। রাজধানীর ছাত্র-জনতাকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।” এতে হাদির সুস্থতা কামনার পরিবর্তে সরাসরি ‘অভ্যুত্থান’-এর হুমকি দেওয়ায় তীব্র সমালোচনা হয়। পরে দ্বিতীয় পোস্টে তিনি দায় চাপান বিএনপির উপর। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, হামলাকারীদের সঙ্গে সাদিক কায়েমের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল এবং এর পেছনে জামায়াতের সুপরিকল্পিত ভূমিকা রয়েছে।

বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুর রশীদ বলেন, “জামায়াত আমিরের লন্ডন সফর এবং হাদির উপর হামলা একই সূত্রে গাঁথা। বিএনপি-জামায়াতের পুরনো জোট ভেঙে গেলেও লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে গোপন সমঝোতা চলছে। এই অস্থিরতা বাড়িয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে, যাতে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হয় এবং তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণ হয়।”

আরেক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. সেলিমা রহমান মনে করেন, “এই ঘটনাগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বড় বাধা। জামায়াতের এই কৌশল দেশকে আরও অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারেক রহমানের ফেরার আগে এই সফর গোপন ষড়যন্ত্রেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে বলছেন, এসব ঘটনা জনগণের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। সচেতন মহলের আহ্বান—এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে না পড়ে স্থিতিশীলতা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশের ভবিষ্যৎ এখন গভীর সংকটের মুখে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একের পর এক অস্থিরতার মধ্যে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের হঠাৎ লন্ডন সফর। ঠিক যখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ২৫ ডিসেম্বর, তখনই জামায়াতের শীর্ষ নেতার এই যাত্রা রাজনৈতিক মহলে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এটা কি বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে নির্বাচনী সমঝোতার গোপন প্রস্তুতি? নাকি আসন্ন ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে অস্থিরতা বাড়িয়ে দেশকে অচল করার গভীর ষড়যন্ত্র?

গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়ে লন্ডনে পৌঁছান ডা. শফিকুর রহমান। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সফরের উদ্দেশ্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক এবং কয়েকটি কর্মসূচি। লন্ডনের কর্মসূচি শেষে তিনি সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করবেন এবং ২১ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন। কিন্তু এই আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। বিশেষ করে তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণার মাত্র কয়েকদিন আগে এই সফর অত্যন্ত সন্দেহজনক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি-জামায়াতের দীর্ঘদিনের জোট যদিও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে গেছে এবং দুই দল এখন প্রতিদ্বন্দ্বী, তবু লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশে গোপন সমঝোতার চেষ্টা চলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনে আসন বণ্টন বা যৌথ কৌশল নিয়ে আলোচনা হতে পারে এই সফরে। যদিও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের কোনো তথ্য তার কাছে নেই—এই উত্তরই রহস্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই সফরের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে আরেকটি গুরুতর ঘটনা—নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরদিন (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে দিনদুপুরে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির উপর নৃশংস গুলিবর্ষণ। বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত এবং এর পেছনে সংগঠিত নেটওয়ার্ক রয়েছে। ঢাকা-৮ আসনটি চাঁদাবাজি ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত, যেখানে বছরে ৪৫০-৫৫০ কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

হামলার মাত্র কয়েক মিনিট পর জামায়াত-ঘনিষ্ঠ ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আবু সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্ট আরও বিতর্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি লিখেছেন: “ওসমান হাদিকে গুলি করা হলো। চাঁদাবাজ ও গ্যাংস্টারদের কবল থেকে ঢাকা সিটিকে মুক্ত করতে অচিরেই আমাদের অভ্যুত্থান শুরু হবে। রাজধানীর ছাত্র-জনতাকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।” এতে হাদির সুস্থতা কামনার পরিবর্তে সরাসরি ‘অভ্যুত্থান’-এর হুমকি দেওয়ায় তীব্র সমালোচনা হয়। পরে দ্বিতীয় পোস্টে তিনি দায় চাপান বিএনপির উপর। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, হামলাকারীদের সঙ্গে সাদিক কায়েমের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল এবং এর পেছনে জামায়াতের সুপরিকল্পিত ভূমিকা রয়েছে।

বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুর রশীদ বলেন, “জামায়াত আমিরের লন্ডন সফর এবং হাদির উপর হামলা একই সূত্রে গাঁথা। বিএনপি-জামায়াতের পুরনো জোট ভেঙে গেলেও লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে গোপন সমঝোতা চলছে। এই অস্থিরতা বাড়িয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে, যাতে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হয় এবং তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণ হয়।”

আরেক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. সেলিমা রহমান মনে করেন, “এই ঘটনাগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বড় বাধা। জামায়াতের এই কৌশল দেশকে আরও অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারেক রহমানের ফেরার আগে এই সফর গোপন ষড়যন্ত্রেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে বলছেন, এসব ঘটনা জনগণের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। সচেতন মহলের আহ্বান—এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে না পড়ে স্থিতিশীলতা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশের ভবিষ্যৎ এখন গভীর সংকটের মুখে।

আরো পড়ুন

সর্বশেষ