Wednesday, December 17, 2025

জামায়াতি কূটকৌশলে ফের ধরা খেল বিএনপি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে রাজধানীর শহীদ মিনার-এ আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কোনো নেতার উপস্থিতি না থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল ও আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি অংশ মনে করছেন, এটি জামায়াতে ইসলামীর পরিকল্পিত কৌশলের ফল, যার ফাঁদে আবারও পা দিয়েছে বিএনপি।

সোমবার ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও বিএনপির কোনো নেতা সেখানে যোগ দেননি। তবে সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধিদের সক্রিয় উপস্থিতি চোখে পড়েছে।

বিতর্কিত বক্তব্যে উত্তাপ বাড়ে

এই সমাবেশে সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম-এর “একটা লাশ পড়লে আমরা কিন্তু লাশ নেব” বক্তব্য নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ-এর ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে দেওয়া বক্তব্য নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। বিশ্লেষকদের মতে, এসব বক্তব্য সমাবেশের মূল উদ্দেশ্যকে ছাপিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

কেন সমাবেশে গেল না বিএনপি?

বিশ্লেষকদের ধারণা, শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস যেভাবে একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন, সেটিই সোমবারের সমাবেশে বিএনপির নেতাদের অনুপস্থিত থাকার অন্যতম কারণ। অনেকের মতে, এটি ছিল জামায়াতের পরিকল্পিত ‘চাল’, যাতে বিএনপিকে কোণঠাসা করা যায় এবং রাজনৈতিক দায় তাদের ঘাড়ে চাপানো যায়।

ঢাকা-৮ এ হামলা ও নতুন উদ্বেগ

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই রাজধানীর ব্যস্ত এলাকা ঢাকা-৮ আসনে দিনের আলোতে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনা নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, এমন ঘটনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত।

হামলার পরপরই হাদির সঙ্গে থাকা একজন ব্যক্তি এই ঘটনার জন্য বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে দায়ী করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও এ বিষয়ে এখনো কোনো নির্ভরযোগ্য তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি?

ঘটনার মাত্র ১৫–২০ মিনিটের মধ্যেই ডাকসুর সাবেক ভিপি ও জামায়াত-ঘনিষ্ঠ ছাত্রনেতা সাদিক কায়েম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রথম পোস্টে লেখেন— “ওসমান হাদিকে গুলি করা হলো। চাঁদাবাজ ও গ্যাংস্টারদের কবল থেকে ঢাকা সিটিকে মুক্ত করতে অচিরেই আমাদের অভ্যুত্থান শুরু হবে।”

এই পোস্টে হাদির সুস্থতা কামনা বা সহানুভূতির কোনো বক্তব্য না থাকায় সমালোচনা শুরু হয়। বরং সেখানে ‘অভ্যুত্থান’-এর হুমকি ও উসকানিমূলক ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। ঘণ্টা দুয়েক পর দেওয়া দ্বিতীয় পোস্টে তিনি সরাসরি ঘটনার দায় বিএনপির ওপর চাপান। অভিযোগ রয়েছে, সাদিক কায়েমের সঙ্গে হামলাকারী শ্যুটারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।

ঢাকা-৮: অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব

গোয়েন্দা ও রাজনৈতিক সূত্রের দাবি, পুরো ঘটনার পেছনে জামায়াতের সুপরিকল্পিত ভূমিকা রয়েছে। ঢাকা-৮ আসনটি রাজধানীর অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, যেখানে বছরে আনুমানিক ৪৫০ থেকে ৫৫০ কোটি টাকার চাঁদাবাজির অর্থনৈতিক প্রবাহ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস হলেও, জামায়াত এবার পুরো এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় এবং সে লক্ষ্যেই সাদিক কায়েমকে প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা রয়েছে।

রাজনৈতিক অশনিসংকেত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলা ও এর পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা ছড়াতে পারে। একই সঙ্গে এটি প্রমাণ করছে, নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক সহিংসতার ঝুঁকি বাড়ছে। দলগুলোর মতে, অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।

সব মিলিয়ে, ইনকিলাব মঞ্চের সমাবেশে বিএনপির অনুপস্থিতি, বিতর্কিত বক্তব্য এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট—সবকিছু মিলিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে: আসন্ন নির্বাচন কি আরও অশান্তির দিকে এগোচ্ছে, নাকি এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক কৌশলেরই অংশ?

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে রাজধানীর শহীদ মিনার-এ আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কোনো নেতার উপস্থিতি না থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল ও আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি অংশ মনে করছেন, এটি জামায়াতে ইসলামীর পরিকল্পিত কৌশলের ফল, যার ফাঁদে আবারও পা দিয়েছে বিএনপি।

সোমবার ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও বিএনপির কোনো নেতা সেখানে যোগ দেননি। তবে সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধিদের সক্রিয় উপস্থিতি চোখে পড়েছে।

বিতর্কিত বক্তব্যে উত্তাপ বাড়ে

এই সমাবেশে সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম-এর “একটা লাশ পড়লে আমরা কিন্তু লাশ নেব” বক্তব্য নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ-এর ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে দেওয়া বক্তব্য নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। বিশ্লেষকদের মতে, এসব বক্তব্য সমাবেশের মূল উদ্দেশ্যকে ছাপিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

কেন সমাবেশে গেল না বিএনপি?

বিশ্লেষকদের ধারণা, শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস যেভাবে একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন, সেটিই সোমবারের সমাবেশে বিএনপির নেতাদের অনুপস্থিত থাকার অন্যতম কারণ। অনেকের মতে, এটি ছিল জামায়াতের পরিকল্পিত ‘চাল’, যাতে বিএনপিকে কোণঠাসা করা যায় এবং রাজনৈতিক দায় তাদের ঘাড়ে চাপানো যায়।

ঢাকা-৮ এ হামলা ও নতুন উদ্বেগ

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই রাজধানীর ব্যস্ত এলাকা ঢাকা-৮ আসনে দিনের আলোতে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনা নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, এমন ঘটনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত।

হামলার পরপরই হাদির সঙ্গে থাকা একজন ব্যক্তি এই ঘটনার জন্য বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে দায়ী করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও এ বিষয়ে এখনো কোনো নির্ভরযোগ্য তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি?

ঘটনার মাত্র ১৫–২০ মিনিটের মধ্যেই ডাকসুর সাবেক ভিপি ও জামায়াত-ঘনিষ্ঠ ছাত্রনেতা সাদিক কায়েম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রথম পোস্টে লেখেন— “ওসমান হাদিকে গুলি করা হলো। চাঁদাবাজ ও গ্যাংস্টারদের কবল থেকে ঢাকা সিটিকে মুক্ত করতে অচিরেই আমাদের অভ্যুত্থান শুরু হবে।”

এই পোস্টে হাদির সুস্থতা কামনা বা সহানুভূতির কোনো বক্তব্য না থাকায় সমালোচনা শুরু হয়। বরং সেখানে ‘অভ্যুত্থান’-এর হুমকি ও উসকানিমূলক ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। ঘণ্টা দুয়েক পর দেওয়া দ্বিতীয় পোস্টে তিনি সরাসরি ঘটনার দায় বিএনপির ওপর চাপান। অভিযোগ রয়েছে, সাদিক কায়েমের সঙ্গে হামলাকারী শ্যুটারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।

ঢাকা-৮: অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব

গোয়েন্দা ও রাজনৈতিক সূত্রের দাবি, পুরো ঘটনার পেছনে জামায়াতের সুপরিকল্পিত ভূমিকা রয়েছে। ঢাকা-৮ আসনটি রাজধানীর অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত, যেখানে বছরে আনুমানিক ৪৫০ থেকে ৫৫০ কোটি টাকার চাঁদাবাজির অর্থনৈতিক প্রবাহ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস হলেও, জামায়াত এবার পুরো এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় এবং সে লক্ষ্যেই সাদিক কায়েমকে প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা রয়েছে।

রাজনৈতিক অশনিসংকেত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলা ও এর পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা ছড়াতে পারে। একই সঙ্গে এটি প্রমাণ করছে, নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক সহিংসতার ঝুঁকি বাড়ছে। দলগুলোর মতে, অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।

সব মিলিয়ে, ইনকিলাব মঞ্চের সমাবেশে বিএনপির অনুপস্থিতি, বিতর্কিত বক্তব্য এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট—সবকিছু মিলিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে: আসন্ন নির্বাচন কি আরও অশান্তির দিকে এগোচ্ছে, নাকি এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক কৌশলেরই অংশ?

আরো পড়ুন

সর্বশেষ