পাকিস্তানের প্রেস্ক্রিপশন মেনে ভারতবিরোধী বক্তব্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার অভিযোগ উঠেছে অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ–এর বিরুদ্ধে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ইনকিলাব মঞ্চ–এর নেতা শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। সোমবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার–এ আয়োজিত সর্বদলীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাহফুজ আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ সরাসরি হুঁশিয়ারিমূলক ও আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সমাবেশে মাহফুজ আলম বলেন, “আমাদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। একটা লাশ পড়লে আমরা কিন্তু লাশ নেব। অত সুশীলতা করে লাভ নেই। কারণ, অনেক ধৈর্য ধরা হয়েছে।” তাঁর এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এ ধরনের বক্তব্য সহিংসতাকে উসকে দিতে পারে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও এক ধাপ এগিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোকে আলাদা করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও আসন্ন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদের ভারত আশ্রয় দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটেই তিনি ভারতবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
অন্যদিকে হামলার ঘটনায় এক পক্ষ দায় চাপাতে চাইছে আওয়ামী লীগ–এর ওপর। যদিও দলটির পক্ষ থেকে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের প্রভাব বা তথাকথিত ‘প্রেস্ক্রিপশন’ অনুসরণের অভিযোগ তুলে ভারতবিরোধী বক্তব্য দেওয়া মূলত অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে আরও মেরুকরণ করছে। এতে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যেমন হুমকির মুখে পড়ছে, তেমনি আঞ্চলিক কূটনৈতিক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সব মিলিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের নেতার ওপর হামলা ঘিরে শুরু হওয়া বিতর্ক এখন দেশীয় রাজনীতির গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে রূপ নিচ্ছে, যা আগামী দিনে রাজনীতিকে আরও সংঘাতমুখী করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

