সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এক প্রার্থীর নির্বাচনী পথসভায় গান গাইতে দেখা গেছে পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই (সশস্ত্র) মো. মহিবুল্লাহকে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওটি দেশজুড়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এটি কেবল একজন কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতার ঘটনা নয়; এটি স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সরাসরি হস্তক্ষেপের প্রমাণ।
অভিযুক্ত এএসআই মো. মহিবুল্লাহ পূর্বে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্সে দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমানে বাগেরহাট পুলিশ লাইন্সে কর্মরত। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী, পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকতে হয়। তবু তিনি প্রকাশ্যে জামায়াতের পক্ষে অংশগ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষ পুলিশ প্রশাসন মাঠ পর্যায়ে নির্দেশ দিয়েছেন জামাত প্রার্থীকে জয়ী করতে হবে। সরকারি গ্রীন সিগন্যালের সঙ্গে পুলিশের এই সক্রিয়তা প্রমাণ করছে যে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভোটপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার সুপরিকল্পিত চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে ভোটবিহীন নির্বাচন কেবল সম্ভাব্য নয়, বরং বাস্তবেই তা সহজ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযোগ দাখিলের পরও নির্বাচন কমিশন নিঃশব্দ, আর সেনাবাহিনীও নীরব। সরকারের নীরবতা, নির্বাচন কমিশনের অচল অবস্থা এবং সেনাবাহিনীর নিরবতা—সব মিলিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও সাধারণ মানুষের আস্থা হুমকির মুখে। জনগণ স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছে যে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের গ্রীন সিগন্যাল থাকলেই রাষ্ট্রীয় বাহিনী রাজনৈতিকভাবে প্রতিক্রিয়া দিতে বাধ্য।
গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা, নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং রাষ্ট্রীয় নৈতিকতা রক্ষার জন্য সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সেনাবাহিনী অবিলম্বে সরাসরি ও দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য। আর এ বিষয়ে দেরি বা নীরবতা রাষ্ট্রীয় বিশ্বাসযোগ্যতা ও জনগণের আস্থা ধ্বংস করার সমতুল্য হবে।

