Wednesday, December 10, 2025

শান্তির জন্য ভারতকে টুকরো টুকরো করতে হবে, বললেন গোলাম আজমের ছেলে

ভারতকে টুকরো টুকরো করা ছাড়া বাংলাদেশে শান্তি ফিরবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আজমী। তিনি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ও সাবেক জামায়াতে ইসলামী আমির গোলাম আজমের ছেলে। গোলাম আজম ১৯৭১ সালে হিন্দু ও মুক্তিযুদ্ধ-সমর্থক বাঙালিদের বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আজমীর এই মন্তব্য দ্রুতই ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

আজমীর অভিযোগ, নয়াদিল্লি সবসময়ই বাংলাদেশের ভেতরে “অশান্তি জিইয়ে রাখে”। আলোচনায় আজমী দাবি করেন, চট্টগ্রাম বিভাগের তিন পার্বত্য জেলাজুড়ে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত চলা অশান্তির পেছনে ভারতের “সরাসরি ভূমিকা” ছিল। তাঁর বক্তব্য, শেখ মুজিবুর রহমানের সময় গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এবং তাদের সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীকে ভারত আশ্রয়, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, যার ফলে দুই দশক ধরে পাহাড়ে রক্তপাত চলেছে।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিকেও তিনি “নাটক” বলে উল্লেখ করেন—যেখানে শান্তিবাহিনীর অস্ত্র জমা দেওয়া ছিল তাঁর ভাষায় “কেবল আনুষ্ঠানিকতা”।

সামাজিক মাধ্যমে ভারতবিরোধী মন্তব্যের জন্য পরিচিত আজমীর এ বক্তব্য এমন সময়ে এসেছে, যখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা চলছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য আবারও দেখিয়ে দিচ্ছে, ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের প্রভাবশালী কট্টরপন্থীরা কতটা সক্রিয় হচ্ছে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল ময়ঙ্ক চৌবে মন্তব্য করেছেন, আজমীর বক্তব্য কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ক্ষমতার অন্দরমহলে লুকিয়ে থাকা একটি “মানসিকতার” বহিঃপ্রকাশ। তাঁর সতর্কবার্তা, এ ধরনের বক্তব্য প্রমাণ করছে চরমপন্থীরা আজ কেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ভারতের উচিত সতর্ক ও প্রস্তুত থাকা, কারণ “কূটনৈতিক হাসির আড়ালে যারা ভারত ভেঙে ফেলার স্বপ্ন দেখে, তাদের দিকে নজর রাখতে হবে।”

আগামী বছরের শুরুতেই বাংলাদেশে নির্বাচন হওয়ার কথা, এবং ভারত নিবিড়ভাবে সেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। বিশেষ করে যেহেতু একসময়ের নিষিদ্ধ দল জামায়াতে ইসলামীর প্রভাব আবার বাড়ছে। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সাথে তাদের সম্পর্ক নিয়েও পুরোনো অভিযোগ রয়েছে। হাসিনা সরকার সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দলটিকে নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু ইউননূস সরকারের সময় তারা আবার রাজনৈতিক মাঠে ফিরে এসেছে। বিএনপির এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা থাকলেও জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে, জামায়াতও শক্ত অবস্থানে আছে। গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের ছাত্র সংগঠনের চমকপ্রদ সাফল্য তাদের পুনরুত্থানকে আরও দৃশ্যমান করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, “ভারতকে ভেঙে ফেললেই নাকি বাংলাদেশে শান্তি আসবে”—এ ধরনের দাবি শুধু ভুল নয়, বরং ইতিহাসকে উল্টো করে দেখানোর এক বিপজ্জনক প্রচেষ্টা। এটি ভুলিয়ে দিতে চায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষায় ভারতের ভূমিকার কথা। তখন কোটি কোটি শরণার্থীর জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া থেকে শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতা থামাতে ভারত জীবন বাজি রেখে সেনা পাঠিয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতকে “টুকরো টুকরো করার” আহ্বান কোনো শান্তির রূপরেখা নয়। এটি নৈতিক এবং রাজনৈতিক উভয় পর্যায়েই চরম বিশ্বাসঘাতকতা। দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি কখনোই কোনো প্রতিবেশী দেশের বিভক্তিকরণ কল্পনা করে আসতে পারে না। বিশেষ করে সেই দেশের শক্তিই যখন বারবার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শান্তি আসতে পারে কেবল সহযোগিতা, পারস্পরিক সম্মান এবং আমাদের যৌথ ইতিহাসকে সম্মান করার মধ্য দিয়ে তাকে বিকৃত করার মাধ্যমে নয়।

ভারতকে দুর্বল করার উস্কানি দেওয়া মানে শুধু ভিত্তিহীন রাজনীতি নয়, বরং সেই সব শহীদদের আত্মত্যাগকে অপমান করা, যাদের কারণে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে দাঁড়িয়ে আছে। একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ ভারত যে বাংলাদেশে শান্তি ও অগ্রগতির অন্যতম বড় সহায়ক, তা অস্বীকার করার কোনো পথ নেই।

ভারতকে টুকরো টুকরো করা ছাড়া বাংলাদেশে শান্তি ফিরবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আজমী। তিনি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ও সাবেক জামায়াতে ইসলামী আমির গোলাম আজমের ছেলে। গোলাম আজম ১৯৭১ সালে হিন্দু ও মুক্তিযুদ্ধ-সমর্থক বাঙালিদের বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আজমীর এই মন্তব্য দ্রুতই ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

আজমীর অভিযোগ, নয়াদিল্লি সবসময়ই বাংলাদেশের ভেতরে “অশান্তি জিইয়ে রাখে”। আলোচনায় আজমী দাবি করেন, চট্টগ্রাম বিভাগের তিন পার্বত্য জেলাজুড়ে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত চলা অশান্তির পেছনে ভারতের “সরাসরি ভূমিকা” ছিল। তাঁর বক্তব্য, শেখ মুজিবুর রহমানের সময় গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এবং তাদের সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীকে ভারত আশ্রয়, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, যার ফলে দুই দশক ধরে পাহাড়ে রক্তপাত চলেছে।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তিকেও তিনি “নাটক” বলে উল্লেখ করেন—যেখানে শান্তিবাহিনীর অস্ত্র জমা দেওয়া ছিল তাঁর ভাষায় “কেবল আনুষ্ঠানিকতা”।

সামাজিক মাধ্যমে ভারতবিরোধী মন্তব্যের জন্য পরিচিত আজমীর এ বক্তব্য এমন সময়ে এসেছে, যখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা চলছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য আবারও দেখিয়ে দিচ্ছে, ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের প্রভাবশালী কট্টরপন্থীরা কতটা সক্রিয় হচ্ছে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল ময়ঙ্ক চৌবে মন্তব্য করেছেন, আজমীর বক্তব্য কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ক্ষমতার অন্দরমহলে লুকিয়ে থাকা একটি “মানসিকতার” বহিঃপ্রকাশ। তাঁর সতর্কবার্তা, এ ধরনের বক্তব্য প্রমাণ করছে চরমপন্থীরা আজ কেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ভারতের উচিত সতর্ক ও প্রস্তুত থাকা, কারণ “কূটনৈতিক হাসির আড়ালে যারা ভারত ভেঙে ফেলার স্বপ্ন দেখে, তাদের দিকে নজর রাখতে হবে।”

আগামী বছরের শুরুতেই বাংলাদেশে নির্বাচন হওয়ার কথা, এবং ভারত নিবিড়ভাবে সেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। বিশেষ করে যেহেতু একসময়ের নিষিদ্ধ দল জামায়াতে ইসলামীর প্রভাব আবার বাড়ছে। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সাথে তাদের সম্পর্ক নিয়েও পুরোনো অভিযোগ রয়েছে। হাসিনা সরকার সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দলটিকে নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু ইউননূস সরকারের সময় তারা আবার রাজনৈতিক মাঠে ফিরে এসেছে। বিএনপির এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা থাকলেও জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে, জামায়াতও শক্ত অবস্থানে আছে। গত সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের ছাত্র সংগঠনের চমকপ্রদ সাফল্য তাদের পুনরুত্থানকে আরও দৃশ্যমান করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, “ভারতকে ভেঙে ফেললেই নাকি বাংলাদেশে শান্তি আসবে”—এ ধরনের দাবি শুধু ভুল নয়, বরং ইতিহাসকে উল্টো করে দেখানোর এক বিপজ্জনক প্রচেষ্টা। এটি ভুলিয়ে দিতে চায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষায় ভারতের ভূমিকার কথা। তখন কোটি কোটি শরণার্থীর জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া থেকে শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতা থামাতে ভারত জীবন বাজি রেখে সেনা পাঠিয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতকে “টুকরো টুকরো করার” আহ্বান কোনো শান্তির রূপরেখা নয়। এটি নৈতিক এবং রাজনৈতিক উভয় পর্যায়েই চরম বিশ্বাসঘাতকতা। দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি কখনোই কোনো প্রতিবেশী দেশের বিভক্তিকরণ কল্পনা করে আসতে পারে না। বিশেষ করে সেই দেশের শক্তিই যখন বারবার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শান্তি আসতে পারে কেবল সহযোগিতা, পারস্পরিক সম্মান এবং আমাদের যৌথ ইতিহাসকে সম্মান করার মধ্য দিয়ে তাকে বিকৃত করার মাধ্যমে নয়।

ভারতকে দুর্বল করার উস্কানি দেওয়া মানে শুধু ভিত্তিহীন রাজনীতি নয়, বরং সেই সব শহীদদের আত্মত্যাগকে অপমান করা, যাদের কারণে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে দাঁড়িয়ে আছে। একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ ভারত যে বাংলাদেশে শান্তি ও অগ্রগতির অন্যতম বড় সহায়ক, তা অস্বীকার করার কোনো পথ নেই।

আরো পড়ুন

সর্বশেষ