বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে বড় আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হঠাৎ গুরুতর অসুস্থতা। দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সমর্থক মহলে এখন প্রকাশ্য অভিযোগ উঠেছে যে, এটি কোনো স্বাভাবিক অসুস্থতা নয় বরং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে “সুপরিকল্পিত বিষ প্রয়োগ”। উদ্দেশ্য একটাই— ২০২৬ সালের নির্বাচন এড়িয়ে ভোট ছাড়াই রাষ্ট্রক্ষমতা দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখা এবং বিএনপির নেতৃত্বকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করা।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন ঠিকই, কিন্তু ২৩ নভেম্বরের পর থেকে যে ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে তা চিকিৎসকদেরও বিস্মিত করেছে। সবচেয়ে সন্দেহজনক বিষয় হলো, অসুস্থ অবস্থাতেই তাঁকে সেনা কল্যাণ অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে ফেরার পরপরই তাঁর অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। একাধিক সূত্র দাবি করছে, ওই অনুষ্ঠানে তাঁর শরীরে ধীরগতির বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে, যা লিভার ও কিডনিকে দ্রুত ধ্বংস করছে। এই বিষ এতটাই নিখুঁত যে, বিদেশি চিকিৎসকরাও এখনো এর প্রকৃতি শনাক্ত করতে পারছেন না। এভারকেয়ার হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থতার গতি অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস প্রকাশ্যে বলেছেন, “এটা সাধারণ অসুস্থতা নয়, পরিকল্পিত হামলা।” দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে দাবি, খালেদা জিয়াকে জীবিত রেখে তারেক রহমানের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যাতে তিনি দেশে ফিরলে তাঁর বিরুদ্ধে “মায়ের হত্যাকারী” তকমা সেঁটে বিএনপির ঐক্য ভেঙে ফেলা যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, ইউনূসের হাসপাতাল ভিজিট, বিদেশি ডাক্তার আনা, কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা—সবই জনসম্মুখে “নিরীহ” ইমেজ তৈরির কৌশল। আড়ালে চলছে বিএনপি নিশ্চিহ্ন করার মাস্টারপ্ল্যান। এক সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “খালেদা জিয়া বেঁচে থাকলে ২০২৬-এ বিএনপির জয় প্রায় নিশ্চিত। তাই তাঁকে শারীরিকভাবে সরিয়ে তারেককে মানসিকভাবে ধ্বংস করার এই খেলা চলছে।”
সামাজিক মাধ্যমে আরও ভয়ঙ্কর গুজব ছড়িয়েছে যে, খালেদা জিয়া আসলে ২৮ নভেম্বরই মারা গেছেন; মৃত্যু ঘোষণা আটকে রাখা হয়েছে তারেক রহমানকে ফাঁসাতে। তারেক রহমানের পাসপোর্ট জটিলতা ও নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে লন্ডন থেকে দেশে ফেরা এখনো অনিশ্চিত।
এই অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ইউনূসের সরকারের অন্যান্য কর্মকাণ্ডও সন্দেহের ঘেরাটোপে পড়েছে। ঘনঘন অগ্নিকাণ্ড, রাজনৈতিক হত্যা, মব সন্ত্রাস—এসবকে বিশ্লেষকরা ‘নির্বাচনহীন ক্ষমতার মাস্টারপ্ল্যান’-এর অংশ বলে দেখছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, “বোডার্লেস বিশ্বে আমেরিকার উদ্দেশ্য সফল করতে ইউনূস মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিলীন করতে চান। খালেদা জিয়ার মতো আইকনকে লক্ষ্য করে এই নাশকতা গণতন্ত্রের মর্মান্তিক আঘাত। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে এমন ষড়যন্ত্র চলছে যা শুধু বিএনপি নয়, সারা দেশকে ধ্বংস করবে।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “প্রথমে শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়ে অসুস্থ করেছেন, এখন ইউনূস সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকায় থেকে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে শেষ করার চেষ্টা করছে।”

