Thursday, December 11, 2025

রক্তস্নাত জনপদ খুলনা: একশ লাশ, এক প্রহসন

একশটা মানুষের লাশ। খুলনায়। এক বছরে। এই তথ্যটা নিয়ে যারা ক্ষমতায় বসে আছেন, তাদের মুখে কোনো কথা নেই। থাকবেই বা কেন? যে সরকার নিজেই হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছে, সেই সরকার খুলনার মৃত্যুর মিছিল নিয়ে কী বলবে?

জুলাই থেকে আগস্টে রাস্তায় কত মানুষ মরেছে তার হিসাব এখনো স্পষ্ট নয়। সরকারি হিসাব কম, বেসরকারি হিসাব বেশি, কিন্তু আসল সত্য হলো সেই মৃত্যুগুলোর কোনো বিচার হয়নি। যারা গুলি চালিয়েছে, যারা হেলিকপ্টার থেকে নির্দেশ দিয়েছে, যারা পরিকল্পনা করেছে, তাদের একজনও আজ পর্যন্ত আদালতে দাঁড়ায়নি। উল্টো যারা মরেছে তাদের পরিবারই এখন নিপীড়নের শিকার। এই হলো ইউনুসের তথাকথিত সংস্কারের মূল চরিত্র।

এখন খুলনায় প্রতি সপ্তাহে মানুষ খুন হচ্ছে। আদালতের সামনে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে দুজনকে মেরে ফেলা হচ্ছে। ডুমুরিয়ায় একজন যুবকের চোখ তুলে নিয়ে লাশ ফেলে রাখা হচ্ছে। বাড়ির ভেতরে ঢুকে নানি আর তার দুই নাতিনাতনিকে খুন করা হচ্ছে। নদীতে ভাসছে অচেনা লাশ। এই বর্বরতার মাত্রা দেখে মনে হয় রাষ্ট্রীয় কাঠামোটাই ভেঙে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী খুলনা শহরে পাঁচ আগস্টের পর থেকে আটচল্লিশটা হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এটা আগের বছরের দ্বিগুণ। জেলা পুলিশের হিসাবে সাতচল্লিশটা খুন। নৌপুলিশ নদী থেকে তুলেছে পঞ্চাশটা লাশ। এই সংখ্যাগুলো শুধু পরিসংখ্যান নয়, এগুলো একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের প্রমাণপত্র। যে সরকার নিজেকে সংস্কারক বলে দাবি করছে, সেই সরকারের আমলে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর পরিণত হয়েছে হত্যার মাঠে।

মজার ব্যাপার হলো ইউনুস আর তার দল বিদেশে গিয়ে গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের বুলি আওড়াচ্ছেন। পশ্চিমা দাতারা তাদের পিঠ চাপড়ে দিচ্ছে। অথচ খুলনার রাস্তায় মানুষের রক্ত শুকানোর সময় পাচ্ছে না। এই দ্বৈততা কতটা গভীর হলে একজন মানুষ বিদেশে মানবাধিকারের বক্তৃতা দিতে পারেন আর নিজের দেশে মানুষ খুন হতে থাকে নির্বিকার?

খুলনায় যে হত্যাযজ্ঞ চলছে তার নেপথ্যে রয়েছে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সন্ত্রাসীদের যুদ্ধ। গোয়েন্দা সূত্র বলছে খুলনায় মাসে সত্তর থেকে একশ কোটি টাকার মাদক কেনাবেচা হয়। পুরনো মাদক সম্রাটরা পালিয়ে গেছে, নতুন বাজারসৃষ্টিরা বাজার দখল নিয়ে খুনোখুনিতে নেমেছে। এই তথ্য পুলিশের কাছে আছে, গোয়েন্দাদের কাছে আছে, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। কারণ যারা ক্ষমতায় বসে আছেন তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় খুলনার সাধারণ মানুষের জীবন নেই। তাদের অগ্রাধিকার হলো নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করা, আর বিদেশি প্রভুদের সন্তুষ্ট রাখা।

ইউনুস সরকার এসেছিল বিচার আর সংস্কারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। কিন্তু আজ পর্যন্ত জুলাই আগস্টের গণহত্যার কোনো বিচার হয়নি। যে পুলিশ তখন গুলি চালিয়েছে, সেই পুলিশই এখন খুলনায় মামলা করছে। যে প্রশাসনিক কাঠামো তখন হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছিল, সেই কাঠামোই এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে। এই হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কারণ ইউনুস সরকারের আসল উদ্দেশ্য কখনোই বিচার ছিল না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটা নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করা।

এই ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া কীভাবে হয়েছিল সেটা এখন আর গোপন নেই। বিদেশি অর্থায়ন, চরমপন্থী গোষ্ঠীর সমর্থন, আর সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ ভূমিকা মিলে তৈরি হয়েছিল জুলাইর দাঙ্গা। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ঢাল বানিয়ে রাস্তায় নামানো হয়েছিল, তাদের পেছন থেকে চালানো হয়েছিল সুপরিকল্পিত সহিংসতা। এই পুরো প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে যারা ছিলেন, তারাই এখন রাষ্ট্রের কর্ণধার। তারা কীভাবে বিচার করবেন? নিজেদের বিরুদ্ধে?

খুলনার পরিস্থিতি আসলে পুরো দেশের চিত্র। রাজধানীতে প্রতিদিন ছিনতাই, রাহাজানি, খুনের ঘটনা ঘটছে। চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি আর টেন্ডারবাজির নতুন রাজত্ব কায়েম হয়েছে। সিলেটে সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র আর মাদক চোরাচালানের নতুন রুট খুলেছে। দেশের কোনো অংশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক নেই। কিন্তু সরকারের কাছে এসব বিষয় গৌণ। তারা ব্যস্ত আছেন সংবিধান পরিবর্তনের খসড়া তৈরিতে, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনায়, আর নিজেদের ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ানোর ফন্দিফিকিরে।

ইউনুসের পুরো সরকার ব্যবস্থাটাই একটা প্রহসন। একদিকে তারা দাবি করছেন তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান, অন্যদিকে কোনো নির্বাচনের তারিখ দিচ্ছেন না। একদিকে বলছেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন, অন্যদিকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে নির্বিঘ্নে। একদিকে মানবাধিকারের কথা বলছেন, অন্যদিকে রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর নির্যাতন চলছে প্রতিদিন। এই দ্বিচারিতার মূল কারণ হলো এই সরকারের কোনো জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা নেই। তারা জনগণের ভোটে আসেননি, তাদের জনগণের কাছে ফিরে যেতে হবে না।

খুলনায় যে মানুষগুলো মরছে তাদের বেশিরভাগই গরিব, নিম্নবিত্ত। যাদের কোনো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক নেই, যাদের জন্য কোনো মিডিয়া সরব হয় না, যাদের মৃত্যু নিয়ে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার মাথাব্যথা নেই। এই নীরব মৃত্যুগুলোই আসলে ইউনুস সরকারের আসল চরিত্র তুলে ধরে। তারা যতই উচ্চকিত হোন না কেন সংস্কারের কথা বলে, বাস্তবতা হলো তাদের আমলে সাধারণ মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই।

যে সরকার জনগণের রক্তের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, সেই সরকারের কাছ থেকে বিচার আশা করা বোকামি। যে সরকারের নিজের হাত রক্তে ভেজা, সেই সরকার খুলনার খুনের বিচার করবে কী করে? এই মৌলিক প্রশ্নটা যতদিন না উত্থাপিত হবে, ততদিন খুলনার মতো আরও শহরে মানুষ মরতে থাকবে। ততদিন আইনশৃঙ্খলার অবনতি চলতে থাকবে। ততদিন সন্ত্রাসীরা আরও শক্তিশালী হবে।

ইউনুস সরকার এখন একটা জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছে। কিন্তু যে পরিবেশে খুলনায় দিনের বেলা আদালত চত্বরে মানুষ খুন হয়, সেই পরিবেশে নির্বাচন কতটা অবাধ আর সুষ্ঠু হবে? যে রাষ্ট্রে মৌলিক নিরাপত্তাই নেই, সেখানে ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা ভাবা অবাস্তব। কিন্তু এই সরকারের কাছে এসব প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক। তাদের লক্ষ্য হলো যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা, জনগণের নিরাপত্তা নয়।

খুলনার একশ লাশ আসলে একটা হিসাবের খাতা। প্রতিটা লাশ একটা প্রশ্ন তুলছে ইউনুস সরকারের নৈতিকতা নিয়ে। প্রতিটা মৃত্যু প্রমাণ করছে যে এই সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। প্রতিটা খুনের মামলা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে যারা নিজেরাই খুনি, তারা বিচার করতে পারে না। এই সত্যটা যত দ্রুত দেশের মানুষ বুঝবে, ততই মঙ্গল।

একশটা মানুষের লাশ। খুলনায়। এক বছরে। এই তথ্যটা নিয়ে যারা ক্ষমতায় বসে আছেন, তাদের মুখে কোনো কথা নেই। থাকবেই বা কেন? যে সরকার নিজেই হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছে, সেই সরকার খুলনার মৃত্যুর মিছিল নিয়ে কী বলবে?

জুলাই থেকে আগস্টে রাস্তায় কত মানুষ মরেছে তার হিসাব এখনো স্পষ্ট নয়। সরকারি হিসাব কম, বেসরকারি হিসাব বেশি, কিন্তু আসল সত্য হলো সেই মৃত্যুগুলোর কোনো বিচার হয়নি। যারা গুলি চালিয়েছে, যারা হেলিকপ্টার থেকে নির্দেশ দিয়েছে, যারা পরিকল্পনা করেছে, তাদের একজনও আজ পর্যন্ত আদালতে দাঁড়ায়নি। উল্টো যারা মরেছে তাদের পরিবারই এখন নিপীড়নের শিকার। এই হলো ইউনুসের তথাকথিত সংস্কারের মূল চরিত্র।

এখন খুলনায় প্রতি সপ্তাহে মানুষ খুন হচ্ছে। আদালতের সামনে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে দুজনকে মেরে ফেলা হচ্ছে। ডুমুরিয়ায় একজন যুবকের চোখ তুলে নিয়ে লাশ ফেলে রাখা হচ্ছে। বাড়ির ভেতরে ঢুকে নানি আর তার দুই নাতিনাতনিকে খুন করা হচ্ছে। নদীতে ভাসছে অচেনা লাশ। এই বর্বরতার মাত্রা দেখে মনে হয় রাষ্ট্রীয় কাঠামোটাই ভেঙে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী খুলনা শহরে পাঁচ আগস্টের পর থেকে আটচল্লিশটা হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এটা আগের বছরের দ্বিগুণ। জেলা পুলিশের হিসাবে সাতচল্লিশটা খুন। নৌপুলিশ নদী থেকে তুলেছে পঞ্চাশটা লাশ। এই সংখ্যাগুলো শুধু পরিসংখ্যান নয়, এগুলো একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের প্রমাণপত্র। যে সরকার নিজেকে সংস্কারক বলে দাবি করছে, সেই সরকারের আমলে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর পরিণত হয়েছে হত্যার মাঠে।

মজার ব্যাপার হলো ইউনুস আর তার দল বিদেশে গিয়ে গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের বুলি আওড়াচ্ছেন। পশ্চিমা দাতারা তাদের পিঠ চাপড়ে দিচ্ছে। অথচ খুলনার রাস্তায় মানুষের রক্ত শুকানোর সময় পাচ্ছে না। এই দ্বৈততা কতটা গভীর হলে একজন মানুষ বিদেশে মানবাধিকারের বক্তৃতা দিতে পারেন আর নিজের দেশে মানুষ খুন হতে থাকে নির্বিকার?

খুলনায় যে হত্যাযজ্ঞ চলছে তার নেপথ্যে রয়েছে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সন্ত্রাসীদের যুদ্ধ। গোয়েন্দা সূত্র বলছে খুলনায় মাসে সত্তর থেকে একশ কোটি টাকার মাদক কেনাবেচা হয়। পুরনো মাদক সম্রাটরা পালিয়ে গেছে, নতুন বাজারসৃষ্টিরা বাজার দখল নিয়ে খুনোখুনিতে নেমেছে। এই তথ্য পুলিশের কাছে আছে, গোয়েন্দাদের কাছে আছে, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। কারণ যারা ক্ষমতায় বসে আছেন তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় খুলনার সাধারণ মানুষের জীবন নেই। তাদের অগ্রাধিকার হলো নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করা, আর বিদেশি প্রভুদের সন্তুষ্ট রাখা।

ইউনুস সরকার এসেছিল বিচার আর সংস্কারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। কিন্তু আজ পর্যন্ত জুলাই আগস্টের গণহত্যার কোনো বিচার হয়নি। যে পুলিশ তখন গুলি চালিয়েছে, সেই পুলিশই এখন খুলনায় মামলা করছে। যে প্রশাসনিক কাঠামো তখন হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছিল, সেই কাঠামোই এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে। এই হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কারণ ইউনুস সরকারের আসল উদ্দেশ্য কখনোই বিচার ছিল না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটা নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করা।

এই ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া কীভাবে হয়েছিল সেটা এখন আর গোপন নেই। বিদেশি অর্থায়ন, চরমপন্থী গোষ্ঠীর সমর্থন, আর সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ ভূমিকা মিলে তৈরি হয়েছিল জুলাইর দাঙ্গা। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ঢাল বানিয়ে রাস্তায় নামানো হয়েছিল, তাদের পেছন থেকে চালানো হয়েছিল সুপরিকল্পিত সহিংসতা। এই পুরো প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে যারা ছিলেন, তারাই এখন রাষ্ট্রের কর্ণধার। তারা কীভাবে বিচার করবেন? নিজেদের বিরুদ্ধে?

খুলনার পরিস্থিতি আসলে পুরো দেশের চিত্র। রাজধানীতে প্রতিদিন ছিনতাই, রাহাজানি, খুনের ঘটনা ঘটছে। চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি আর টেন্ডারবাজির নতুন রাজত্ব কায়েম হয়েছে। সিলেটে সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র আর মাদক চোরাচালানের নতুন রুট খুলেছে। দেশের কোনো অংশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক নেই। কিন্তু সরকারের কাছে এসব বিষয় গৌণ। তারা ব্যস্ত আছেন সংবিধান পরিবর্তনের খসড়া তৈরিতে, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনায়, আর নিজেদের ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ানোর ফন্দিফিকিরে।

ইউনুসের পুরো সরকার ব্যবস্থাটাই একটা প্রহসন। একদিকে তারা দাবি করছেন তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান, অন্যদিকে কোনো নির্বাচনের তারিখ দিচ্ছেন না। একদিকে বলছেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন, অন্যদিকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে নির্বিঘ্নে। একদিকে মানবাধিকারের কথা বলছেন, অন্যদিকে রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর নির্যাতন চলছে প্রতিদিন। এই দ্বিচারিতার মূল কারণ হলো এই সরকারের কোনো জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা নেই। তারা জনগণের ভোটে আসেননি, তাদের জনগণের কাছে ফিরে যেতে হবে না।

খুলনায় যে মানুষগুলো মরছে তাদের বেশিরভাগই গরিব, নিম্নবিত্ত। যাদের কোনো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক নেই, যাদের জন্য কোনো মিডিয়া সরব হয় না, যাদের মৃত্যু নিয়ে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার মাথাব্যথা নেই। এই নীরব মৃত্যুগুলোই আসলে ইউনুস সরকারের আসল চরিত্র তুলে ধরে। তারা যতই উচ্চকিত হোন না কেন সংস্কারের কথা বলে, বাস্তবতা হলো তাদের আমলে সাধারণ মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই।

যে সরকার জনগণের রক্তের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, সেই সরকারের কাছ থেকে বিচার আশা করা বোকামি। যে সরকারের নিজের হাত রক্তে ভেজা, সেই সরকার খুলনার খুনের বিচার করবে কী করে? এই মৌলিক প্রশ্নটা যতদিন না উত্থাপিত হবে, ততদিন খুলনার মতো আরও শহরে মানুষ মরতে থাকবে। ততদিন আইনশৃঙ্খলার অবনতি চলতে থাকবে। ততদিন সন্ত্রাসীরা আরও শক্তিশালী হবে।

ইউনুস সরকার এখন একটা জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছে। কিন্তু যে পরিবেশে খুলনায় দিনের বেলা আদালত চত্বরে মানুষ খুন হয়, সেই পরিবেশে নির্বাচন কতটা অবাধ আর সুষ্ঠু হবে? যে রাষ্ট্রে মৌলিক নিরাপত্তাই নেই, সেখানে ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা ভাবা অবাস্তব। কিন্তু এই সরকারের কাছে এসব প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক। তাদের লক্ষ্য হলো যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা, জনগণের নিরাপত্তা নয়।

খুলনার একশ লাশ আসলে একটা হিসাবের খাতা। প্রতিটা লাশ একটা প্রশ্ন তুলছে ইউনুস সরকারের নৈতিকতা নিয়ে। প্রতিটা মৃত্যু প্রমাণ করছে যে এই সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। প্রতিটা খুনের মামলা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে যারা নিজেরাই খুনি, তারা বিচার করতে পারে না। এই সত্যটা যত দ্রুত দেশের মানুষ বুঝবে, ততই মঙ্গল।

আরো পড়ুন

সর্বশেষ